মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার সর্বত্র কপি খেতে সরু পোকার আক্রমনে
দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বালাই নাশক ব্যবহার করেও পোকা দমন করতে
পারছেন না কপি চাষিরা। পোকা দমনে কৃষি অফিসের কোনো ধরনের সহায়তা
পাচ্ছেন না বলে কৃষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ বিষয়টি
অস্বীকার করে বলেছে, কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গাংনী উপজেলা কৃষি বিভাগের দুই হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ফুল কপি ও বাধা
কপির চাষ করা হয়েছে। যা গেল বছরের তুলনায় দেড়গুন। জেলার কালিগাংনী
হিজলবাড়িয়া, কুতুবপুর, শোলমারি ও গাংনী উপজেলার, কাথুলী, ধলা, নওয়াপাড়া,
জোড়পুকুর, গাড়াবাড়িয়া গ্রামের মাঠে চাষিরা লাভের আশায় কপির চাষ করে।
এসব ক্ষেতের আশি ভাগই সরু পোকার আক্রমণের শিকার। পোকার আক্রমণের কারণে
অধিকাংশ কপির খেতে পাতা ফুটো ও হলুদ আকার ধারন করেছে। এক পর্যায়ে
শিকড় পচে গাছ মরে যাচ্ছে। পোকা দমনে কৃষকেরা বিভিন্ন কোম্পানির
বালাইনাশক ব্যবহার করেও কোনো ধরনের সুফল পাচ্ছেন না।
সাহারবাটি গ্রামের কপি চাষি তহসিন আলী জানান, তিনি এবার ৫ বিঘা
জমিতে ফুল কপি ও বাধা কপি আবাদ করেছেন। ফলন ভাল হবে বলে আশাও করেছেন।
কিন্তু সরু পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তিনি। পোকাগুলো এসে ফুল
ও পাতা ফুটো করে গর্ত করছে। ছিদ্র হওয়ায় ফুল কপি ও বাধা কপি খাবার অযোগ্য
হয়ে পড়ছে। পোকা দমনের জন্য বিভিন্ন ধরণের বালাই নাশক ব্যবহার করছেন, কিন্তু
কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না আক্রমণ। এক বিঘা জমিতে ৪ হাজার থেকে ৫
হাজার টাকার শুধু কিটনাশক ব্যবহার করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এতে অন্ততঃ দেড়
লাখ টাকার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুধু তহসিন নয় তার মতো অনেক কপি চাষি এ ধরণের পোকার আক্রমণে দিশেহারা।
চাষিরা জানান, গেল বছর আগাম জাতীয় কপির চাষ করে বেশ লাভবান হয়েছিলেন।
এবারও লাভের আশায় বেশি করে কপির চাষ করেছেন। অথচ সরু পোকার আক্রমণে সব
আশা ধুলোয় মিশে গেছে। কৃষি অফিস তেমন কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
বালাইনাশক বিক্রেতাদের পরামর্শের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন জানান, চাষিদের অভিযোগ সঠিক
নয়। চাষিদেরকে সব সময় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। বালাই নাশক ব্যবহারের পরও তেমন
কাজ না হওয়ায় কীটনাশক কোম্পানী ও বালঅই নাশক বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ
করা হচ্ছে। চাষিদেরকে সে অনুযায়ি কাজ করতে বলা হবে। চাষিরা এতে ফল পাবেন
বলেও আশাবাদী।