অন্য সবজির চেয়ে ফুলকপি ও বাঁধাকপির পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। সিরাজগঞ্জে কপি চাষে ঝুঁকেছেন স্থানীয় কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ক্ষেতে ফলনও হয়েছে বাম্পার। তাই কপি চাষে লাভের আশা করছেন তারা। সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কয়েলগাঁতি গ্রামে কপি চাষি মোক্তার জানান, অন্য ফসলের চেয়ে কপি চাষে খরচ ও খাটুনি দুটিই কম। ধান চাষে যেমন খরচ তেমনি রোপনের পর থেকে নানা দুঃচিন্তায় থাকতে হয়। তাই ধানের বদলে আগাম কপি (সবজি) চাষে ঝুঁকছেন তারা। এরমধ্যে পাতাকপি ও ফুলকপি এখন মুখ্য ফসল। এই মৌসুমে অনাবাদি ও উঁচু শ্রেণির জমিতে আগাম কপি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। মাচা পদ্ধতির মাধ্যমে আশ্বিন মাসে চারা তৈরি করেন কৃষক। এরপর আশ্বিনের মাঝামাঝি ও কার্তিকের প্রথম থেকেই কপির আবাদ শুরু করেন। একই গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে কপির চাষ করেছেন তিন বিঘা জমিতে। কিছু দিনের মধ্যে কপিতে ফুল আসবে বলে আশা তার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ধান আবাদ করে লাভ তো দুরের কথা খরচের টাকা তুলতেই হিমশিম খেতে হয়। আতাউরের মত অনেক কৃষকই আমন ও বোরো ধানের পরিবর্তে এখন কপি চাষে ব্যস্ত। ওই ইউনিয়নের কৃষক বদরুল ইসলাম, ইয়াচিন আলী, মনোয়ার হোসেন বলেন, বিঘা প্রতি কপি চাষে খরচ ১৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় কপি উৎপাদন হয় ৮০ থেকে ৮৫ মণ। প্রতি মণ কপির বর্তমান মূল্য ২ হাজার ৮০০ টাকা। এই দরে বিক্রি হলে মোট বিক্রি হবে ২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এতে সার, বীজ, কিষান, (শ্রমিক) হাল, নিড়ানি, পরিবহন খরচ (১৫ হাজার টাকা) বাদে লাভ থাকবে ২ লাখ ১৫ টাকা। অপরদিকে, মনোয়ার বলেন প্রতি বিঘায় কপি ফলে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারটি। ভরা মৌসুমে প্রতিটি কপি (দেড় কেজি) ২০ টাকা করে বিক্রি হলে সাড়ে ৩ হাজার কপি বিক্রি হয় ৭০ হাজার টাকা। আর খরচ (১৫ হাজার টাকা) বাদে প্রতি বিঘায় লাভ হয় ৫৫ হাজার টাকা। তিনি বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগাম কপি চাষে লাভবান ও স্বাবলম্বী হতে পারব। এলাকাবাসী জানান গত কয়েক বছরের তুলনায় সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের কয়েলগাঁতী গ্রামে আগাম ফুল কপি ও পাতা কপির ব্যাপক চাষ হয়েছে। ওই এলাকার মাটি কপি চাষের জন্য উপযোগী। কারণ সেচ, সার, বালাই নাশক ওষুধ ছাড়াই কপির বাস্পার ফলন হয়েছে। দাম ও ফলন দুটোই ভালো হওয়ায় কৃষকদের আগ্রহ দিনের পর দিন বাড়ছে। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটছে।