আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজাকে গ্রেফতার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের একটি টিম।
সোমবার (২৪ মে) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার আসাদুজ্জামান যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন।
ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান জানান, আমির হামজার বিরুদ্ধে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটে তদন্তাধীন একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলায় তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে তাকে আজ কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তাকে সিটিটিসি কার্যালয়ে আনা হচ্ছে।
এর আগে সোমবার বিকাল ৫টার দিকে কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ি ইউনিয়নের ডাবুরাভিটা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আমির হামজাকে হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে একটি কালো গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয় বলে তার পারিবার নিশ্চিত করেছেন।
মুফতি আমির হামজা কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পাটিকাবাড়ী ইউনিয়নের রিয়াজ সর্দারের ছেলে। মুফতি আমীর হামজা বাংলাদেশ জাতীয় মুফাসসীর পরিষদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকায় আকিজ গ্রুপের মসজিদের খতিব ছিলেন।
আমির হামজার স্ত্রী তামান্না সুলতানা বলেন, রোববার দুপুরে মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে গ্রামের বাড়িতে যান আমীর হামজা। সোমবার বিকাল ৫টার দিকে আমার শ্বশুর বাড়িতে ৬ থেকে ৭ জন সাদা পায়জামা পাঞ্জাবী পরা ব্যক্তি প্রবেশ করে। পরিবারের লোকজন কোন কিছু বলার আগেই তাকে হাতে হ্যান্ডক্যাপ পরিয়ে একটি কালো হাইচ গাড়ীতে তোলেন। পরে ওই ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা দ্রুত গাড়ী নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ মে সংসদ ভবন এলাকা থেকে তলোয়ার নিয়ে সংসদ ভবনে হামলা চালানোর চেষ্টায় সাকিব নামে একজনকে আটক করা হয়। সাকিবকে আটকের পর শেরেবাংলা নগর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ওই মামলায় সাকিবসহ আলী হাসান ও মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে আসামি করা হয়। এসময় সাকিবের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সাকিব মোবাইল ফোনে উগ্রবাদ বার্তা সংবলিত ভিডিও প্রচারকারী আলী হাসান উসামা, মাহমুদুল হাসান গুনবী এবং আমির হামজার উগ্রবাদী জিহাদি হামলার বার্তা সংবলিত ভিডিও দেখে উগ্রবাদে আসক্ত হয়।
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তালিকায় যেসব বক্তাদের নাম ছিল তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। এখনও বেশ কয়েকজন কথিত ইসলামী বক্তা নিয়মিত ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জিহাদের ডাক দিয়ে যাচ্ছেন। এদের মধ্যে অন্যতম দুজন মাহমুদুল হাসান গুনবী ও মুফতি আমির হামজা।
ওয়াজের মাধ্যমে ধর্মের অপব্যাখ্যা ও দেশজুড়ে উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে আলোচিত ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজাকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছিল পুলিশ।
পুলিশের দাবি, আমির হামজা ওয়াজ-মাহফিলে ইসলামের নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়েছেন এবং ইউটিউবে অবমুক্ত তার বেশ কিছু বক্তব্য উগ্রবাদ ছড়াচ্ছে। যা শুনে কোমলমতি কিশোর-তরুণরা জঙ্গিবাদে আকৃষ্ট হচ্ছেন। সাম্প্রতিক হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অভিযানের কারণে আত্মগোপনে রয়েছেন আমির হামজা এমন সংবাদ কয়েকটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এমন খবর প্রকাশিত হলে তিনি একটি বিবৃতিও দেন। বিবৃতিতে আমির হামজা বলেছিলেন ‘আমি চোর নয় যে পালিয়ে বেড়াবো’।