দেশে-বিদেশে নানা অপপ্রচার হচ্ছে এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের শীতকালীন অধিবেশনের সমাপ্তি ও রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুজিবের বাংলায় কেউ গৃহহীন থাকবে না। ইতোমধ্যে ৭০ হাজার গৃহহীনকে ঘর দেয়া হয়েছে। আরও এক লাখ ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে। বাংলাদেশকে আর পিছিয়ে রাখা যাবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে এত কথা অথচ এরকম একটা কাজ নিজস্ব অর্থায়নে করলাম। সেটার প্রশংসা তো দিতেই পারলো না। উল্টো বিএনপির নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিল, জোড়া তালি দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু করা হচ্ছে কেউ উঠবেন না। তাহলে নদীটা পার হবে কিসে? যদি নৌপথে যেতে হয় তাহলে নৌকায় যেতে হবে। উপায় তো নাই। নৌকায় চড়তে হবে।’
সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘আমাদের নৌকা অনেক বড়, কোনো অসুবিধে নাই। আমাদের নৌকা অনেক বড় সবাইকে নেব, তবে দেখে নেব কেউ আবার নৌকায় বসে নৌকা ফুটো না করে।’
বিএনপিতে নেতৃত্বের অভাব এমন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) এখন নেতৃত্বের অভাব। আমাকে হত্যা চেষ্টার মামলায় যারা সাজাপ্রাপ্ত, তারা যখন কোনো দলের নেতৃত্বে থাকে সেই দল জনগণের কাজ করবে কীভাবে? জনগণ এখন তাদের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বিএনপি যতই বক্তব্য দেক, যত কথাই বলুক, এই ধরনের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি যখন একটা দলের নেতৃত্বে তাদের ওপর মানুষের আস্থা থাকে না, বিশ্বাস থাকে না। মানুষ আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আস্থা ও বিশ্বাস পেয়েছে, দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, দেশের মানুষের কল্যাণ হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের আস্থা বিশ্বাস আওয়ামী লীগ অর্জন করেছে। যার প্রতিফলন আমরা দেখলাম আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে।
সরকারপ্রধান আরও বলেন, মানুষ এখন আন্তরিকভাবে ভোট দিচ্ছে। আমরা ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিচ্ছি। সেখানে ভোট কারচুপির কোনো সুযোগ নেই। যার যার ভোট সে নিজে দিতে পারে। এখন আর সেই ‘দশটা হোন্ডা বিশটা গুণ্ডা নির্বাচন ঠান্ডা’ সেই পদ্ধতি নেই। কিংবা ভোট দিতে গিয়ে দেখল ভোট বন্ধ সেটা করা হয় না। তবে মেয়র ইলেকশনেও আমাদের কিছু কিছু জায়গায় কমিশনারদের মধ্যে গোলমাল হয়েছে সেগুলো আলাদা।
রেওয়াজ অনুযায়ী অধিবেশনে সংসদ নেতার সমাপনী বক্তব্যের আগে বক্তব্য দেন বিরোধীদলীয় নেতা। এবারের অধিবেশনে একদিনও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জিএম কাদেরকে দেখা যায়নি। জিএম কাদের করোনা আক্রান্ত হলেও এখন তিনি করোনামুক্ত।
সমাপনী ভাষণে বিরোধীদলীয় নেতার অনুপস্থিতির কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই অধিবেশন করোনার সময়ে চলছে। যার জন্য হয়তো সব সংসদ সদস্যকে একই সঙ্গে আনা সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের বিরোধীদলীয় নেতার এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তার বাসায় একজনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে তিনি জনগণের কথা চিন্তা করে এখানে আসেননি। আমরা তার বক্তৃতা শুনতে পারলাম না এজন্য আমি দুঃখিত, কিন্তু তার ভেতর যে জনগণের প্রতি কল্যাণমূলক চিন্তা তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। তিনি আসলে ভালো হতো আমরা তার বক্তব্যও শুনতে পেতাম।’
করোনাভাইরাস আরেকটু নিয়ন্ত্রণে এলেই শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে বলে জানান সরকারপ্রধান।