রাজধানীর হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে পাবলিক ট্রাস্ট প্রপার্টি ঘোষণা করে প্রকল্প এলাকা থেকে সব ব্যবসায়িক অবৈধ স্থাপনা ৬০ দিনের মধ্যে উচ্ছেদ করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটকারির পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল।
রাজউকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট ইমাম হোসেন।
রায়ে ১০টি নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত
নির্দেশনাগুলো হলো—তুরাগ নদের রায়ের নীতি অনুসারে ঢাকার হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টকে জনগণের সম্পত্তি ঘোষণা, হাতিরঝিল প্রকল্পে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, দোকানসহ সব ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন অবৈধ এবং ৬০ দিনের মধ্যে সব বাণিজ্যিক স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ, প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক স্থাপনা নিষিদ্ধ ঘোষণা, প্রকল্পের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও পরিচালনার জন্য পৃথক একটি কর্তৃপক্ষ গঠন করে প্রধানমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে পরিচালনা, প্রকল্পের স্থায়ী পরামর্শক হিসেবে বুয়েটের প্রকৌশল বিভাগ এবং সেনাবাহিনীর ২৪তম ব্রিগেডকে যৌথভাবে পরামর্শক নিয়োগ করা, প্রকল্প এলাকায় জনসাধারণের জন্য আন্ডারগ্রাউন্ডে ওয়াশরুম তৈরি করা।
প্রকল্প এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা, পায়ে চলা, সাইকেল চালনা এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য আলাদা চলাচলের ব্যবস্থা গ্রহণ করা, প্রকল্পের এলাকার লেকে মাছের অভয়ারণ্য তৈরি করা এবং প্রকল্প এলাকায় বাণিজ্যিক কোনো স্থাপনা হবে না।
হাতিরঝিল-বেগুনবাড়ি প্রজেক্টে লে-আউট প্ল্যানের নির্দেশনার বাইরে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম পরিচালনা বন্ধে রাজউক-এর নিষ্ক্রিয় থাকার প্রতিবেদন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর ২০১৮ সালে রিট করে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।
মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, নান্দনিক এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই অবৈধ রেস্তোরাঁসহ নানা ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু হয়ে যায়। এতে জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচলে যেমন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি প্রকল্পটি তার নান্দনিক সৌন্দর্য হারানোর শঙ্কায় পড়ে। মূল পরিকল্পনার বাইরে অবৈধ স্থাপনার কার্যক্রম সবার চোখের সামনে চললেও রাজউক ছিল নিষ্ক্রিয়।
লে-আউট প্ল্যানের বাইরে কেউ যেন কোনো স্থাপনা করতে না পারে সে জন্য রাজউকের চেয়ারম্যান, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, হাতিরঝিল থানার ওসি এবং প্রকল্প পরিচালককে প্রকল্প এলাকায় নিয়মিত তদারকি করারও নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।