মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, সৌদি আরবের একটি সিদ্ধান্তই রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পারে।
তার মতে, মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরব এবং খনিজ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো যদি তেলের দাম কমিয়ে দেয়, তবে তা সঙ্গে সঙ্গেই যুদ্ধ বন্ধ করে দিতে পারে। এ বিষয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প, কেন এতদিন এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে সুইজারল্যান্ডের দাভোস শহরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সভা থেকে, যেখানে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে কথা বলেছেন। খবর এএফপি।
বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) এই সভায় ট্রাম্প বলেন, আমি সত্যিই অবাক, কেন খনিজ তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো এখনো তেলের দাম কমাচ্ছে না। তার মতে, সৌদি আরব এবং অন্যান্য পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোকে এই পদক্ষেপ নেওয়া আগেই উচিত ছিল, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘তেলের দাম যদি কমে, তাহলে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সঙ্গে সঙ্গেই থেমে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘এটা এমন একটি সিদ্ধান্ত যা আপনাদের (সৌদি আরব এবং ওপেক সদস্য দেশগুলো) দ্রুত নিতে হবে। আমি অবাক, কেন এখনো এটি নেওয়া হয়নি।’
বর্তমান পরিস্থিতিতে তেলের উচ্চ মূল্য এবং বিশ্বব্যাপী মন্দা অর্থনীতি যুদ্ধের দীর্ঘস্থায়িত্বের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন ট্রাম্প। ‘যত দিন পর্যন্ত তেলের দাম কমবে না, তত দিন যুদ্ধ চলতেই থাকবে। যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে তেলের দাম কমাতে হবে।’ এতে তেল রপ্তানিকারক দেশগুলো অনেকাংশে দায়ী বলে মন্তব্য করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে এই যুদ্ধ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রায় তিন বছর ধরে চলা এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে, লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালীন সময় থেকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধান নিয়ে কথা বলে আসছেন। তিনি প্রায়ই বলেছেন, যদি আমি প্রেসিডেন্ট হতাম, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই যুদ্ধ সমাধান করে ফেলতাম এবং সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আবারও দাবি করেছেন, আমি পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসব এবং শিগগিরই বৈঠক আয়োজন করা হচ্ছে।
এভাবে, ট্রাম্প সৌদি আরবের তেলের দাম কমানোর সিদ্ধান্তকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের একটি চমৎকার উপায় হিসেবে দেখছেন। যদিও এটি বাস্তবে কতটা কার্যকরী হবে, তা নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে।