মুমিন সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে। সুখে-দুঃখে সর্বাবস্থায়ই মহান আল্লাহ একমাত্র আশ্রয়স্থল। তিনি ছাড়া আর কেউ বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারে না। সুখ-শান্তি দিতে পারে না। এ কারণে আমাদের উচিত, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখা, তাঁর কাছেই আশ্রয় চাওয়া। যারা সুখের দিনে আল্লাহকে ভুলে যায় এবং দুঃখের দিনে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং দুঃখ থেকে উদ্ধার হলেই আবারও পুরনো বস্তুবাদি চিন্তায় ফেরত যায়, মহান আল্লাহ তাদের পছন্দ করেন না।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর তারা যখন নৌযানে আরোহণ করে, তখন তারা আনুগত্যে বিশুদ্ধ হয়ে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ডাকে। তারপর তিনি যখন স্থলে ভিড়িয়ে তাদের উদ্ধার করেন, তখন তারা শিরকে লিপ্ত হয়।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬৫)
বাস্তব জীবনেও মানুষ যখন গভীর সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়ে, যখন বেঁচে ফেরার আর কোনো আশা থাকে না, তখন সবাই এক বাক্যে আল্লাহকে ডাকতে থাকে। কিন্তু যখন মহান আল্লাহ ঝড় ধামিয়ে তাদের নিরাপদে পাড়ে পৌঁছে দেয়, তখন অনেকে মন্তব্য করে বসে যে আমাদের জাহাজ ভালো হওয়ায় বেঁচে গেছি, নাবিক ভালো হওয়ায় বেঁচে গেছি ইত্যাদি।
তবে এ কথা সত্য যে মানুষ যত বড় খোদাদ্রোহীই হোক, বিপদে সে মহান আল্লাহর কাছেই ফিরে আসে। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। যেমন ফিরাউন আজীবন মহান আল্লাহর নাফরমানিতে লিপ্ত ছিল। যখন সে সাগরে ডুবে মৃত্যুর মুখে পড়ে বলতে শুরু করল, আমি ঈমান এনেছি, যে আল্লাহর ওপর বনী-ইসরাঈলরা ঈমান এনেছে, তাকে ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই। আর আমি তারই আনুগত্যকারীদের অন্তর্ভুক্ত। তখন স্বয়ং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে তার উত্তর দেওয়া হয়েছে, এখন (ঈমান এনেছ)? অথচ ইতিপূর্বে তুমি অবাধ্য ছিলে এবং অশান্তি সৃষ্টিকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে। (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৯১)
এ কারণে সুখের দিনেও মহান আল্লাহর শুকরিয়া করা উচিত। মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা উচিত। তাহলে বিপদের দিনে মহান আল্লাহই আমাদের তার রহম চাদরে আশ্রয় দেবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে লোক বিপদাপদ ও সংকটের সময় আল্লাহ তাআলার অনুগ্রহ লাভ করতে চায়, সে যেন সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের সময় বেশি পরিমাণে দোয়া করে। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮২)। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সর্বাবস্থায় তাঁর অনুগত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।