১৯ মাসের সন্তানকে কোলের কাছে নিয়ে ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন প্রবাসী মো. হালিমের স্ত্রী জান্নাত আক্তার। মধ্যরাতে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে ঘর থেকে বের হন। কিন্তু ফিরে এসে দেখেন আদরে কন্যা রাইসা বিছানায় নেই।
এসময় জান্নাত দেখতে পান ঘরের এক কোণে সিঁধ কাটা। বুঝতে বাকি রইলো না শিশু সন্তানটিকে নিয়ে গেছে সিঁধেল চোর।
কিছুক্ষণ পরই সন্তান হারিয়ে দিশেহারা জান্নাতের মোবাইল ফোনে কল দিয়ে শিশুটিকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য মোটা অংকের চাঁদা দাবি করা হয়। এভাবে একটু পর পর অপহরণকারীরা সন্তানহারা মা জান্নাত আক্তার ও তার দেবরের কাছে টাকা চেয়ে হুমকি দিতে থাকে।
তবে তড়িৎ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে শিশু রাইসা উদ্ধারের রুদ্ধশ্বাস সেই অভিযানের তথ্য জানানো হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলায়। পুলিশ জানায়, শিশু রাইসা চুরির ঘটনার সংবাদ পেয়ে শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে দ্রুত কাজে নেমে পড়েন তিতাস থানার পুলিশ সদস্যরা। সেই সঙ্গে সার্কেল অফিসারের নেতৃত্বে যোগ দেয় কুমিল্লা জেলা পুলিশের একটি বিশেষায়িত দল।
অভিযানে নেমে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে পুরো বিষয়টি নিয়ে অপরণকারীর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যান পুলিশ কর্মকর্তারা। পুলিশের মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে কোনো প্রকার ক্ষতি ছাড়াই শিশুটিকে উদ্ধার করা। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অপরাধীদের গতিবিধি ও অবস্থান নির্ণয় করার পাশাপাশি বিভিন্ন কৌশলে চলতে থাকে উদ্ধার অভিযান।
অবশেষে রাত পৌনে ৮টার দিকে তিতাস উপজেলার বলরামপুরের একটি চর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এরই মধ্যে তীব্র শীতের কারণে শিশুটির শারীরিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করে দ্রুত তিতাস উপজেলা স্বাস্হ্য কম্প্লেক্সে নিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাকে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়।
এই ঘটনায় তিতাস থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।