ভালো নাম শেখ মোহাম্মদ শাহরিয়ার। ডাকনাম আনন্দ। মোহাম্মদপুর নূরজাহান রোডের স্থায়ী বাসিন্দা। গত ১৬ বছর ছাত্রলীগের ওয়ার্ড কমিটির নাম ভাঙিয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়েছে। জিম ইন্সট্রাক্টর হিসেবে এলাকায় নিজেকে জাহির করতো। গত ৫ ই আগস্টের পর রং বদলেছে। প্রথম কিছুদিন এলাকায় স্কুল ও বিভিন্ন দেয়ালে গ্রাফিতি করেছে। তখন থেকেই পরিচয় দেয়া শুরু করে সমন্বয়ক হিসেবে। এরপর যতদিন গড়িয়েছে দাপট বেড়েছে এলাকায়।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের প্রায় তিন মাসের মাথায় এসে এখন মোহাম্মদপুর নূরজাহান রোডসহ আসপাশের রোডগুলোর পুরো নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছে। এলাকার কোন দোকান থাকবে, কোন দোকান থাকবে না -সেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে আনন্দ। এমনকি এলাকার মুদি দোকানগুলোকেও দৈনিক বা সাপ্তাহিক মাসোয়ারা দিতে হচ্ছে। কারো সাথে অমত হলেই ছেলেপেলে নিয়ে চলে ভাঙচুর। মাঝে মাঝেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে চাঁদা দিতে হয় আনন্দ বাহিনীকে। এমন অবস্থায় সবাই ভীত সন্ত্রস্ত।
শুধু এলাকায় চাঁদাবাজি নয়, তার চাচা জনাব আক্তার নূরজাহান রোডের বাইতুল ফজল মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষ। কোষাধ্যক্ষ হিসেবে তার বিরুদ্ধে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সামনে এই মসজিদ কমিটির নির্বাচন। আবারও নির্বাচন করতে চান জনাব মোহাম্মদ আক্তার। চাচার আর্থিক কেলেঙ্কারি ঢাকতে ও আবারও নির্বাচিত করে নিয়ে আসতে একজোট হয়েছে চাচা-ভাতিজা। দুজনই এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। কিছু হলেই সমন্বয়কের ভয় দেখায়। মসজিদ কমিটির নির্বাচনেও সমন্বয়কের নামে প্রভাব বিস্তার করতে চাচ্ছে।
এসব অভিযোগ নিয়ে এলাকাবাসী মুখ খুলতেও ভয় পায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মুদি দোকানদার জানান, ৫ আগস্টের পর দোকান খুলতে ও চালু রাখতে আনন্দকে এখন পর্যন্ত নগদ ২৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। নূরজাহান রোডের এক মম বিক্রেতা জানান, টাকা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় শেষমেষ তার ফুডকার্ট বন্ধ করে দিয়েছে আনন্দ ও তার বাহিনী।
শেখ মোহাম্মদ শাহরিয়ার আনন্দ আসলেই সমন্বয়ক কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সালেহীন অয়ন নিশ্চিত করেন আনন্দ তাদের সমন্বয়কদের কেউ নন। আনন্দের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এমন অভিযোগের বিষয়ে শেখ মোহাম্মদ
শাহরিয়ারকে ফোন দিলেও তিনি ধরেননি। অন্যদিকে তার চাচা জনাব মোহাম্মদ আক্তারকে ফোন দিলে সাংবাদিক পরিচয় শুনেই তিনি কেটে দেন।