সোমবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, বিএনপি সব হারিয়ে এখন গুজবসন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “তারা এখন সরকার বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে দেশে-বিদেশে গুজব ছড়াচ্ছে।” “তাদের অগ্নিসন্ত্রাসের সাথে যুক্ত হয়েছে গুজব সন্ত্রাস।” সব হারিয়ে শোক সাগরে নিমজ্জিত বিএনপি। শোকের মিছিল তো করবেই। “সরকার কচু পাতার পানি নয়। কথার বোমায় সরকারের উৎখাত করা যাবে না।”
তিনি আরো বলেন, “বিএনপির রাজনীতি ভুলের চোরাবালিতে আটকে আছে। তারা যত সরকারের পতন বলবে, সরকারের তত উত্থান হবে। বিএনপি যদি ইতিবাচক রাজনীতি নিয়ে এগুতো, তাহলে হঠাৎ করে তাদের এমন পতন হতো না। সরকারের পতন ঘটাতে গিয়ে তারা নিজেরাই পতনের খাদে পড়ে গেছে।”
বর্তমান সংকট সমাধানে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। একদিনে কোনো সংকটের সমাধান হয় না। সংকটের সমাধানে সরকার ও দলীয়ভাবে কাজ চলবে।”
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি ছিল এবং এ ইশতেহারে থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কী কী কর্ম পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “কর্মপরিকল্পনা নিয়ে তো একটা মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। প্রথম মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সব মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে। এরেইমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এটা তো এক দিন বা দুই দিনের ব্যাপার না। কাজ শুরু হয়েছে এবং দ্রুত গতিতেই শুরু হয়েছে।”
তিনি বলেন, “শুধু সরকারিভাবে নয় আমাদের দলীয়ভাবেও জরুরি বৈঠকে আজ ডাকা হয়েছে। বহুদিন পর জরুরি সভা। জরুরি সভার অর্থ হচ্ছে, জরুরি কিছু বিষয় আছে, সেটা অবশ্যই জনস্বার্থে। জরুরি কিছু বিষয় আছে, সেগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হয় এবং সিদ্ধান্তও হয়। যতদ্রুত সম্ভব দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার কার্যকরী উদ্যোগ নিবে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আসন পাওয়া রাজনৈতিক দলেই হবে প্রধান বিরোধীদল। স্বতন্ত্ররা স্বতন্ত্রই আছে। দল যদি বলেন তাহলে জাতীয় পার্টি।”
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই দেশের সরকারি ও বিরোধী দল- সবদলকেই তো মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে থাকতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী যে দল, সে দল তো স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। যে মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না, সে স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। কাজেই ওরকম বিরোধী দল তো আমরা চাই না। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী দল সংসদে আসবে এবং মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলবে। স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করে উচ্চারণ করবে- সেটা কী আমরা প্রত্যাশা করবো, নাকি আপনারা করবেন?’
তিনি এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “নৌকার জনপ্রিয়তা কমেনি বরং বেড়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা বলেছিল, দেশে সংঘাত বাধাতে স্বতন্ত্র দাঁড় করানো হয়েছে- তাদের কথা মিথ্যা প্রতিপন্ন হয়েছে। যা ভাবা হয়েছিল সেরকম সহিংসতা হয়নি। গণতান্ত্রিক দেশে সংঘাত সহিংসতা হয়, আমাদের দেশ তার বিকল্প না। তুলনায় কম সহিংসতা হয়েছে। যা ভাবা হয়েছিল তা হয়নি, সবাই ভেবেছিল স্বতন্ত্রদের নিয়ে। মিলারের বক্তব্য স্পষ্ট। কৌশল একেক দেশের একেক রকম।”
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক ও সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও পারভীন জামান কল্পনা প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।