করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে আগামী সোমবার (২৮ জুন) থেকে সাতদিনের কঠোর লকাডাউন ঘোষণা দিয়েছেন প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করবে পুলিশ, বিজিবি এবং মোতায়েন থাকবে সেনাবাহিনী।
আগামীকাল প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে এবং এক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।
এবারের লকডাউনে বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সকল অফিস। সকল প্রকার যান চলাচল বন্ধ থাকবে সোমবার থেকে। শুধু জরুরি পণ্যবাহী যান চলাচল করবে। এর বাইরে অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে শুধু যানবাহন চলাচল করতে পারবে।
জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। তবে গণমাধ্যম এর আওতা বহির্ভূত থাকবে। আজ শুক্রবার প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার একথা জানান।
এর আগে, করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে একটানা ১৪ দিনের সম্পূর্ণ শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করেছে কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। গত বুধবার কমিটির ৩৮তম সভায় এ সুপারিশ করা হয়।
সভায় বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণে সারা দেশেই উচ্চ সংক্রমণ, পঞ্চাশোর্ধ্ব জেলায় অতি উচ্চ সংক্রমণ লক্ষ করা যায়। রোগ প্রতিরোধের জন্য খণ্ড খণ্ডভাবে গৃহীত কর্মসূচির উপযোগিতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। অন্যান্য দেশ, বিশেষত পাশের দেশ ভারতের অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, কঠোর ব্যবস্থা ছাড়া এর বিস্তৃতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ভারতের শীর্ষস্থানীয় বিশেষজ্ঞের সঙ্গেও আলোচনা করা হয়েছে। তাঁদের মতামত অনুযায়ী যেসব স্থানে পূর্ণ শাটডাউন প্রয়োগ করা হয়েছে, সেখানে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে রোগের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়া এবং জনগণের জীবনের ক্ষতি প্রতিরোধ করার জন্য কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে সারা দেশে কমপক্ষে ১৪ দিন সম্পূর্ণ শাটডাউন দেওয়ার সুপারিশ করছে।
কমিটির সুপারিশের পর জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি আমলে নিয়ে বলেছিলেন, তাঁদের সুপারিশ অ্যাকটিভ কনসিডারেশনে (সক্রিয় বিবেচনা) নেবো। এটি কমানোর জন্য যেটি করা প্রয়োজন হবে আমরা সেটি করব।
এদিকে, আজ শুক্রবার স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, দেশে করোনাভাইরাসে ১০৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩ হাজার ৯৭৬ জনে। একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আরো পাঁচ হাজার ৮৬৯ জন। এ নিয়ে দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট লাখ ৭৮ হাজার ৮০৪ জনে।