1. [email protected] : দেশ রিপোর্ট : দেশ রিপোর্ট
  2. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  3. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:০৫ অপরাহ্ন

রাজধানীর খালে পড়ে নিখোঁজ ব্যক্তি ৬ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২১

সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ একজন মানসিক বিকারগ্রস্ত মুরব্বির আচরণ দেখে রাজধানীর মিরপুরের কালশী এলাকার ২২ তলা গার্মেন্টস সংলগ্ন সুয়ারেজের খালের পাশে ভিড় জমে যায়। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর ওই লোকটি খালে পড়ে যান। নিখোঁজ ওই ব্যক্তিকে ঘটনার ছয় ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদস্যরা। বাকপ্রতিবন্ধী ও মানসিক বিকারগ্রস্ত ওই ব্যক্তির নাম শামসুল হক (৫০)। তিন একজন চায়ের দোকানি। কয়েকদিন আগে জ্বর হলে তার মাথায় সমস্যা দেখা দেয় জানিয়ে স্ত্রী মুন্নি বেগম বলেন, ‘তিনি সুস্থ মানুষ ছিলেন। কয়েক দিন আগে জ্বর হয় তার। এরপর হঠাৎই তার মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। এরপর মঙ্গলবার সকাল থেকে নিখোঁজ ছিল।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে মিরপুর কালশী এলাকায় তার সঙ্গে কথা বলে পল্লবী থানায় গিয়ে কথা হয় পুলিশের সঙ্গে। নিখোঁজ ব্যক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, গত বুধবার (১২ অক্টোবর) থেকে শামসুল হক নামের ওই লোকটি নিখোঁজ ছিল। এরপর তার স্ত্রী একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নম্বর ১২৭০। এরপর থেকে তার খোঁজ চলছিল।

যেভাবে উদ্ধার

সরেজেমিনে গতকাল দুপুরে মিরপুর কালশী এলাকায় গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে তার সম্পর্কে নানান তথ্য পাওয়া যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকাল ৮টার দিকে মিরপুর ১১ নম্বরের ই ব্লকের সাংবাদিক কলোনী সংলগ্ন কালশি ব্রিজের সামনে একটি ভ্যানের ওপর এক ব্যক্তি কিছুটা উল্টাপাল্টা আচরণ করতে থাকেন। তাই দেখে এগিয়ে যান আরমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তাকে ভ্যান থেকে থামিয়ে স্থানীয় শাহজালাল রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়ে নাস্তা করান তিনি।

হোটেলটির ম্যানেজার মো. লিটন বলেন, ‘লোকটা নাস্তা করার পর হোটেল থেকে বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে ফের পাগলামি শুরু করেন। এভাবে তার আচরণ দেখে অনেকেই থামানোর চেষ্টা করেন। তবে তিনি থামেননি। এরপর সকাল ৯টার দিকে তিনি খালের নোংড়া পানিতে পড়ে যান।’

তখন তাকে সেখান থেকে উঠানোর চেষ্টা চালানো হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, হয়েছিল। তখন অনেক লোকজন সেখানে জড়ো হতে থাকে। ব্রিজের পাশের লোকজন তাকে খাল থেকে উঠানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি নোংড়া কালো পানি মুখে নিয়ে এবং হাত দিয়ে পানি ছিটাতে শুরু করেন। এতে কেউ তার কাছে যেতে পারছিলেন না। এভাবে প্রায় আধাঘণ্টা ধরে চলে তার পাগলামি। এক পর্যায়ে তিনি স্রোতের মধ্যে ব্রিজের নিচে চলে যান। এর ১৫ মিনিটের মধ্যে খবর পেয়ে ফাঁয়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে তার খোঁজ করতে শুরু করেন।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক (জোন-২) মো. আবুল বাশার বলেন, প্রায় ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর ওই নিখোঁজ ব্যক্তিকে লোহার ব্রিজ খাল সংলগ্ন একটি ভবনের সামনে থেকে বিকেল ৩টার দিকে উদ্ধার করা হয়। খালের পানির স্রোতে তিনি এখানে ভেসে চলে এসেছিলেন। আমরা ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করি। এ সময় তার হাত-পা ও চোখ তেমন নড়ছিল না। পরে তাকে পল্লবী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

উদ্ধার পরবর্তী বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, বাউনিয়াবাঁধ এলাকা সংলগ্ন লোহার ব্রিজ খাল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এরপর তাকে পল্লবীর ইসলামিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি অনেকটাই সুস্থ হন। চিকিৎকদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ‘তার শারীরিক অবস্থা ততটা ভালো নয়। আরো চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।’

খাল থেকে তাকে ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করেছে না তিনি একায় উঠেছিলেন জানতে চাইলে নির্মাণার্ধীন লোহার ব্রিজের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি তখন কাজে ব্যস্ত ছিলাম। হঠাৎ একজন রিকশাচালক এসে বলেন, একটি লোক অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। নিপ্পন ভবনের পাশে গিয়ে দেখি লোকটির অবস্থা খারাপ।’

তিনি বলেন, লোকটিকে দেখে মনে হয়েছিল, সকাল থেকে তাকেই খুঁজছিল ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা। তখন ফায়ার সার্ভিসের লোকজনকে জানাই। তারা এসে ওই লোকটিকে উদ্ধার করে।

উদ্ধার হওয়া মানিক মিয়ার ছেলে মো. রিয়াজ বলেন, পল্লবী ১২ নম্বর সেকশনের তিন নম্বর সড়কের ১১ নম্বরে তাদের বাসা। বাবার সঙ্গে মিলে এলাকাতেই একটি চায়ের দোকান চালাতেন তারা। কয়েকদিন আগে তার বাবার হঠাৎ জ্বর হলে মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। এরপর নিখোঁজ হলে এলাকায় মাইকিং করেও বাবাকে পাননি তারা।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৩ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব