যশোর মনিরামপুরে বিয়ের বাড়িতে চলছে আনন্দ উল্লাস ও গান বাজনা। বোন মিতুর বিয়ে আগামী শুক্রবার।আত্মীয়-স্বজনরাও আসা শুরু করেছেন। আগ থেকে বাড়িঘর সাজাতে হবে, আনন্দ করতে হবে। ঘর সাজিয়ে গেট সাজিয়ে বর পক্ষ থেকে নিতে হবে নগদ টাকা। কত কী ভাবনা ছিল তরুণ নয়নের মাথায়!
ঝিকরগাছার গদখালি এলাকায় দুই বন্ধু তহিদুর রহমান ও জীবন হোসেনকে সাথে নিয়ে মোটরসাইকেলে সকালে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন নয়ন। যাওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তাদের তিন বন্ধুর।
নিহত তিনজনের মধ্যে নয়ন ও তহিদুরের বাড়ি মণিরামপুর উপজেলার রোহিতা নোয়াপাড়ায়। অপরজন জীবন হোসেনের বাড়ি যশোর শহরের শংকরপুরে। নয়ন নোয়াপাড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের এবং তহিদুর একই গ্রামের হাসান আলীর ছেলে।
পাত্রী মিতু হচ্ছেন নয়নের খালাতো এবং জীবনের মামাতো বোন। তহিদুর সম্পর্কে নয়নের বন্ধু। তাদের তিনজনেরই বয়স ১৮-১৯ বছরের মধ্যে। দুর্ঘটনার শিকার মোটরসাইকেলটি নিহত জীবনের। তিনি নিজে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন। কয়েকদিন আগে থেকে মামাবাড়ি অবস্থান করছিলেন তিনি।
তিন তরুণের মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে বিয়েবাড়িতে। আনন্দের বদলে সেখানে এখনো চলছে কান্নার রোল।
গতকাল বিকেলে সরেজমিন নিহত নয়ন ও তহিদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার মগরবের মেয়ে মিতুর বিয়ে। সেই আনন্দে বাড়ি সাজাতে গদখালি ফুল আনতে যায় ওই তিন যুবক। যাওয়ার পথে ঝিকরগাছার বেনেয়ালী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজনই মারা যায়।’
নাভারন হাইওয়ে পুলিশের ওসি এএসএম আসাদুজ্জামান স্থানীয়দের বরাত দিয়ে বলেন, মোটরসাইকেল খুব গতিতে চলছিল। বেনেয়ালী এলাকায় একটি ভ্যানের সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যায় তারা তিনজন। পরে একটি ইজিবাইক চাপা দিলে ঘটনাস্থলে মারা যায় জীবন। গুরুতর আহত অপর দুইজনকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার এম আব্দুর রশিদ বলেন, বেলা ১২টার দিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে তহিদ আগেই মারা গিয়েছিলেন। অপরজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় কিছুক্ষণ পর মারা যান।