স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে স্কুল খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক তহবিল ইউনিসেফ। গতকাল শুক্রবার ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বিশ্বের সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, স্কুল খোলা রাখুন। স্কুলগুলো পুরোপুরি বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৬১ কোটি ৬০ লাখ শিশু ক্ষতিগ্রস্ত। কোভিড-১৯-এর অমিক্রন ধরনটি সারা বিশ্বে যখন ছড়িয়ে পড়ছে, এটি যাতে শিশুদের পড়াশোনাকে ব্যাহত করতে না পারে, সে জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই।
পড়াশোনার ক্ষেত্রে বিপর্যয় এড়াতে এবং শিশুদের তাদের শেখার পথে ফিরিয়ে আনতে ইউনিসেফ কিছু সুপারিশও করেছে। এগুলো হলো—
এর আগে ইউনিসেফ এক বিবৃতিতে বলেছে, করোনাভাইরাস মহামারিতে দেড় বছরের বেশি সময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাংলাদেশে ৩ কোটি ৭০ লাখ শিশুর পড়াশোনা ব্যাহত হয়েছে। ইউনিসেফের এক জরিপ করে বলছে, মহামারিকালে বিশ্বজুড়ে স্কুল সম্পূর্ণ বা আংশিক বন্ধ থাকার কারণে ৬৩ কোটি ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মহামারির কারণে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল বাংলাদেশে। দেড় বছর বন্ধ থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে খোলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এবার করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার ফলে সরকার নতুন করে ২৩ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।
স্কুল বন্ধ থাকার কারণে এর নেতিবাচক প্রভাব ক্রমেই বাড়ছে। স্কুল বন্ধ থাকায় তা পড়াশোনার ক্ষতির পাশাপাশি শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করেছে, তাদের নিয়মিত পুষ্টি প্রাপ্তির উৎস কমিয়ে দিয়েছে এবং তাদের নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়েছে। ক্রমেই উঠে আসা তথ্য এসব প্রমাণ দিচ্ছে, কোভিড-১৯ শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে উচ্চহারে উদ্বেগ ও বিষণ্নতা সৃষ্টি করেছে; যেখানে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, মেয়ে, কিশোর-কিশোরী এবং গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ অধিক হারে এ সমস্যাগুলোর সম্মুখীন। স্কুল বন্ধ থাকার সময় বিশ্বব্যাপী ৩৭ কোটির বেশি শিশু স্কুলের খাবার থেকে বঞ্চিত হয়, যা কিছু শিশুর জন্য খাবার ও দৈনিক পুষ্টি প্রাপ্তির একমাত্র নির্ভরযোগ্য উৎস।