নিজের ইসলাম গ্রহণ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা কানাডায়। যদিও আমার আদিপুরুষদের আবাস ছিল স্কান্ডেভিয়ান অঞ্চলে। ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৩ আমি ইসলাম গ্রহণ করি। আমি নাস্তিক না হলেও কোনো ধর্মের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। মধ্য কৈশোরে আমার ভেতর ধর্মচিন্তা শুরু হয়। তখন থেকেই একত্ববাদ আমার বিশ্বাসে জায়গা করে নেয়। খ্রিস্টবাদ কখনোই আমাকে আকর্ষণ করেনি।
মুসলিমদের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ১৯৮৮ সালে। যখন কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল। তাদের জন্যই আমি ইসলাম সম্পর্কে সামান্য কিছু শিখেছিলাম। যেমন রমজানের রোজা। তবে ১৯৯২ সালের আগে ইসলাম সম্পর্কে আমার আগ্রহ জন্মেনি। এ বছর গ্রীষ্মে কানাডার একটি পত্রিকা ইসলামের ওপর আঘাত করে ধারাবাহিক প্রবন্ধ প্রকাশ করে। তারা উদাহরণ হিসেবে মুসলিমদের এমন কিছু ইসলামবিরোধী কাজকে উপস্থাপন করছিল তা আসলেই ইসলামের জন্য ধ্বংসাত্মক। অন্যদিকে অমুসলিমরা মুসলিমদের আচরণ দেখেই ইসলামকে বিচার করে।
আমি তখনো মুসলিম হইনি, তবু সম্পাদকের কাছে একটি চিঠি লিখি, যাতে প্রবন্ধগুলোর প্রতি আপত্তি জানাই এবং ইসলামের পক্ষে কথা বলি। হ্যাঁ, আমি তখন ইসলামের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছি। কয়েক মাস আগে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মুসলিম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন’ (এমএসএ) ‘ইসলাম সম্পর্কে সচেতনতা সপ্তাহ’ পালনের সময় কিছু প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিল। আমি প্রবন্ধগুলো কয়েকবার পড়েছিলাম। তার একটি ছিল ‘ইসলামের একজন নবী হিসেবে ঈসা (আ.)’। আমি একজন মুসলিমের কাছে ইসলাম বিষয়ক কিছু বই চেয়েছিলাম। তারা আমাকে দুজন বিখ্যাত মুসলিম লেখকের বই দিয়েছিল। ইসলামী বইগুলো আমাকে মুগ্ধ করেছিল। আমি বিস্মিত হয়ে বলেছিলাম, এটাই কি তাহলে ইসলাম? পরবর্তী কয়েক মাস অবসর সময়ে আমি ইসলাম বিষয়ে অধ্যয়ন করেছি। ড. মুহাম্মদ হাইকালের ‘দ্য লাইফ অব মুহাম্মদ’ (সা.) পাঠ করেছিলাম। ইসলাম বিষয়ে যারা পাঠ করতে চাই তাদের বলব, ইসলাম বিষয়ক পাঠের জন্য অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা গণমাধ্যম সঠিক ইসলাম শিক্ষা দেয় না, একজন মানুষের আরবি নাম প্রমাণ করে না যে সে ইসলাম ও মুসলিম সম্পর্কে সঠিক ধারণা রাখে।
ইসলাম গ্রহণের আগেই আমি আমার আচার-আচরণ, খাবার ও পোশাকে ইসলামী অনুশাসন মেনে চলছিলাম। মদ ও শূকরের গোশতের মতো হারাম খাবার ছেড়ে দিয়েছিলাম এবং হালাল খাবার খেতাম। এমনকি আমার শহরের একটি মসজিদেও আমি গিয়েছিলাম। ইসলাম গ্রহণের কিছুদিন আগে থেকে রমজানের রোজা রাখাও শুরু করেছিলাম। যখন আমার জীবনের সব কিছু ইসলামের অনুকূল হলো এবং মনে হলো আমি ইসলাম গ্রহণের জন্য প্রস্তুত, তখন ইসলাম গ্রহণ করলাম। ইসলাম গ্রহণের পর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় শুরু করলাম। জানুয়ারি ১৯৯৬ থেকে আমি হিজাব পরিধান শুরু করি। যদিও একটি অমুসলিম সমাজে তা খুব সহজ ছিল না।
ইসলামিক ওয়েব থেকে
মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর।