করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে গোটা ভারতে যখন তৎপরতা শুরু হয়েছে তখন ওই ভ্যাকসিনে শুকরের চর্বি ব্যাবহার নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। ভারতীয় মুসলিম সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাদের ওপর ওই ভাকসিন প্রয়োগ করা যাবে না। তাদের দাবি এই ভ্যাকসিন মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য হারাম।
এমন এক পরিস্থিতিতে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের শাহী ইমাম মাওলানা নুর-উর-রহমান বরকতি।
শনিবার তিনি বলেছেন ‘গোটা বিশ্ব করোনাভাইরাসের কবলে কিন্তু তাই বলে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এই ভাইরাসকে ভয় পায় না এবং তাদের ভ্যকসিনের প্রয়োজন নেই। আমি পরিস্কার করে বলতে চাই, মুসলিমরা ভ্যাকসিন ব্যবহার করবে না।’
এই ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ভারতের মুসলিমদের হত্যা করার ইহুদিদের ষড়যন্ত্র বলে অভিযোগ করে বরকতি জানান ‘করোনাভাইরাস কখনই মুসলিমদের ভয়ের ছিল না। বরং এটা হিন্দুদের ওপর প্রভাব ফেলেছে, তারা ভয় পেয়েছে। মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় করোনার কোন প্রভাবই পড়েনি। আমাদের ওপর আল্লার দোয়া আছে, তাই আমরা এখনও অরক্ষিত আছি।’
শাহী ইমাম স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, তার কোন মুসলিম ভাইয়েরা এই করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার করবে না যতক্ষণ না পর্যন্ত কোন মুসলিম পন্ডিত এই ভ্যাকসিনের ফরমুলা দেখে নির্দেশ দেবে। তিনি বলেন ‘এটা আমাদের জন্য ক্ষতিকারক। শুকরের মাংস খাওয়া বা ব্যবহার করা-উভয়ই ইসলামে হারাম বলে গণ্য করা হয়ে থাকে। তাই এই ভ্যাকসিনের ফর্মুলা প্রথমে কোন ইসলামিক পন্ডিতের সামনে দেখাতে হবে তার পর মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে তা প্রয়োগ করা হবে।’
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের দারুল উলুম দেওবন্দ’ এর এক মৌলবীও মুসলিম সমাজকে আর্জি জানিয়ে বলেছেন, করোনা ভ্যাকসিন ব্যবহার করার আগে মুসলিমদের উচিত, ভ্যাকসিন তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদানগুলি ইসলামের জন্য অনুমমোদিত কি না। এই ভ্যাকসিন মুসলিমদের জন্য নিরাপদ কি না তা ফতোয়া বিভাগের তরফে ঘোষণা দেওয়ার পরই তা ব্যবহার যোগ্য হবে।
গতকালই মুম্বাইয়ের রাজা অ্যাকাডেমির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুর দাবি করেন চীনের করোনা ভ্যাকসিনে পর্ক জিলেটিন ব্যবহার করা হয়েছে ফলে চীনের তৈরি করোনা ভ্যাকসিন অবিলম্বে ভারতে ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত। কারণ এই ভ্যাকসিন মুসলিমদের জন্য হারাম। একইসাথে তার দাবি, কোনও ভ্যাকসিন এ দেশের আনার আগে সরকারের উচিত ভ্যাকসিন সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা। আমাদের জানা দরকার কোন ভ্যাকসিনে কি কি ব্যবহার করা হচ্ছে। তাহলে মুসলিম সমাজের মানুষকে এই বিষয়ে আবগত করা যাবে।
যদিও ফাইজার, মডার্না, অ্যাস্ট্রজেনেকা’এর মতো ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছ তাদের ভ্যাকসিনে পর্ক জিলেটিনের ব্যবহার করা হয়নি।