ভারতের মুম্বাইয়ের ফিল্ম সিটিতে চলছে বাংলাদেশের জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং। বলিউড নির্মাতা শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় চলা এ ছবির কাজের অগ্রগতি দেখতে সেখানে আজ (৮ ফেব্রুয়ারি) গিয়েছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
মুম্বাইয়ের এক প্রান্তে গোরেগাঁওয়ের ফিল্ম সিটিতে ছবির লোকেশনে গিয়ে শুধু দেখা করাই নয়, পুরো টিমের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজও সারলেন তথ্যমন্ত্রী। শুটিংয়ে লাঞ্চব্রেকের পর চললো তুমুল আড্ডাও।
বঙ্গবন্ধুর ভূমিকায় চিত্রনায়ক আরেফিন শুভসহ বিভিন্ন চরিত্রে যে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা আছেন, তাদের প্রায় সবার সঙ্গেই কথা বলে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নানা বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ যে এই ছবিটির নির্মাণের দিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছেন, মনে করিয়ে দেন সে কথাও।
ফিল্ম সিটিতে তার এই সফরে সঙ্গী ছিলেন মহারাষ্ট্র রাজ্যের সংস্কৃতিমন্ত্রী অমিত দেশমুখ। এই মন্ত্রীও টিম ‘বঙ্গবন্ধু’র সঙ্গে এদিনের মধ্যাহ্নভোজে যোগ দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ ও ভারত সরকার যৌথভাবে এই ছবি প্রযোজনা করছে। বাংলাদেশের দিক থেকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বিএফডিসি যেমন রয়েছে, তেমনি ভারতের তরফে সরকারের চলচ্চিত্র শাখা এনএফডিসিও সহ-প্রযোজক হিসেবে কাজ করছে।
মধ্যাহ্নভোজের অবকাশে পরিচালক শ্যাম বেনেগাল তথ্যমন্ত্রীকে জানান, শুটিংয়ের কাজ চলছে দারুণ গতিতে এবং মসৃণভাবে। ভারতের পর্ব মিটলে তারা আগস্টের শেষ দিকে বা সেপ্টেম্বরের গোড়ায় বাংলাদেশের অংশটুকুতে শুটিং শুরু করবেন–পুরো টিম সেদিকেই এখন তাকিয়ে আছে।
বেনেগাল পরে এদিন রাতে টেলিফোনে বলেন, ‘‘আমি তথ্যমন্ত্রীকে বললাম, আপনার দেশের সব শিল্পী এতটাই ডেডিকেশন দিয়ে এত ভালো কাজ করছেন যে, আমরা ‘অ্যাহেড অব দ্য শিডিউল’ চলছি।’’
‘ইন ফ্যাক্ট এত দ্রুত কাজ হচ্ছে যে ইচ্ছে না থাকলেও গত ৩ তারিখ আমি শুটিংয়ে একটা ছুটি দিতেও বাধ্য হলাম। কারণ, কাজ অনেক এগিয়ে গেছে’- সব বাংলাদেশি শিল্পীর দারুণ তারিফ করে বলেন বলিউডের এই বরেণ্য নির্মাতা।
এর আগে গত ২১ জানুয়ারি ফিল্ম সিটিতে ‘শুভ মহরত’ করে আনুষ্ঠানিকভাবে বঙ্গবন্ধু বায়োপিকের শুটিং শুরু হয়েছিল। সে অনুষ্ঠানের প্রথম খবর ও ছবি বেরিয়েছিল বাংলা ট্রিবিউনেই।
সেদিনের আয়োজনে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন মুম্বাইতে বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের প্রধান তথা ভারতে নিযুক্ত ডেপুটি হাইকমিশনার লুতফর রহমান। এবারও তিনি ফিল্ম সিটিতে তথ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী ছিলেন।
এর আগে ড. হাছান মাহমুদ তার এই ভারত সফরে কলকাতায় বাংলাদেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল উদ্বোধন করেন। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাও। তাদের দুজনের মধ্যে কলকাতায় আলাদা বৈঠকও হয়েছে।
কলকাতা থেকেই সরাসরি তথ্যমন্ত্রী এদিন মুম্বাইতে গিয়ে পৌঁছান। এয়ারপোর্ট থেকেই তিনি চলে যান গোরেগাঁও ফিল্ম সিটিতে টিম ‘বঙ্গবন্ধু’র সঙ্গে দেখা করতে।
উল্লেখ্য, আরেফিন শুভ-সহ এই ছবির বাংলাদেশি সব অভিনেতাকে মুম্বাই রওনা হওয়ার আগে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘রিসেপশনে’ আপ্যায়িত করেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তাদের সঙ্গে অনেক কথাবার্তাও বলেছিলেন তিনি।
তারপর এবার সরকারের দ্বিতীয় আরেকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি মুম্বাই এসে পুরো টিমের মনোবল বাড়িয়ে দিয়ে গেলেন!