মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানকে ব্যর্থ করে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা দেখতে চায় জাতিসংঘ। মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করার ঘটনাকে অগ্রহণযোগ্য আখ্যা দিয়ে বলেছেন, অভ্যুত্থানকারীদের বুঝিয়ে দিতে হবে এটা কোনওভাবেই দেশ শাসনের উপায় নয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এদিন অভিযান চালিয়ে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি এবং ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটক করা হয়। রাজধানী নেপিডো ও প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় রাস্তায় টহল দিতে শুরু করে সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। এরপর সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে অভ্যুত্থানের খবর নিশ্চিত করে সেনাবাহিনী। অং সান সু চি-র সরকারকে উচ্ছেদ করা ‘অপরিহার্য’ ছিল বলে মন্তব্য করেন দেশটির সেনাপ্রধান।
মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের নিন্দা জানাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা হয়েছে। তবে সেই প্রস্তাব আটকে দিয়েছে চীন। অভ্যুত্থানের পর আটক হওয়া অং সান সু চির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে তাকে দুই সপ্তাহের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অভ্যুত্থানের পর থেকেই সু চি কিংবা উৎখাত হওয়া প্রেসিডেন্ট উইন মিয়ান্টের কোনও বক্তব্য শোনা যায়নি।
এমন অবস্থায় মিয়ানমারে সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা পুনর্বহাল করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব। এই ইস্যুতে নিরাপত্তা পরিষদ ঐক্যমতে পৌঁছাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেন, মিয়ানমারের এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ করতে যথেষ্ট পরিমাণ চাপ প্রয়োগ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ সব পক্ষকে সচল করতে আমরা সব কিছুই করবো।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচনের ফলাফল এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা বদলে দেওয়া চরম অগ্রহণযোগ্য। আশা করি মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে বোঝানো সম্ভব হবে যে এটা দেশ শাসনের পদ্ধতি নয় আর এইভাবে সামনে এগোনো যায় না।’
পশ্চিমা দেশগুলো নির্বিশেষে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের নিন্দা জানালেও চীনের বিরোধিতায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এই বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে। নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যের একটি দেশ চীন। তাদের ভেটো ক্ষমতাও রয়েছে।