আন্তর্জাতিক তো দূরে থাক, ঘরোয়া ক্রিকেটেও কখনও তিন অঙ্কের ঘরে যাওয়া হয়নি মেহেদী হাসান মিরাজের। সেই তিনিই লম্বা বিরতির পর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই পেয়ে গেলেন সেঞ্চুরি। তার ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রাম টেস্টে বড় সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে স্বাগতিকরা করেছে ৪৩০ রান।
জোমেল ওয়ারিকানের বলে ২ রান নিয়েই সেঞ্চুরি পূরণ করেন মিরাজ। ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করতে লেগেছে তার ১৬০ বল। স্মরণীয় ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ১৩ বাউন্ডারিতে।
এর আগে দ্বিতীয় দিনের লাঞ্চ বিরতির পরই টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফসেঞ্চুরি পেয়েছেন মিরাজ। ৯৯ বলে মাইলফলকটিতে পৌঁছান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও জাতীয় দলে এসে হয়ে গেছেন তিনি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। সুযোগ পেলে কিংবা প্রয়োজনের সময় প্রায়ই জ্বলে ওঠে মিরাজের ব্যাট। চট্টগ্রাম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে যেমন হলো।
সাকিব আল হাসানের বিদায়ের পর দারুণ ব্যাটিংয়ে দলের হাল ধরেন মিরাজ। ঠান্ডা মাথায় তবে প্রয়োজনে আগ্রাসী হয়েছে তার ব্যাট। ফিফটি পূরণ করার পথে হাঁকিয়েছেন ৭ বাউন্ডারি।
মিরাজের ব্যাটে আশা
ফিরে গেছেন সাকিব আল হাসান। তবে অন্যপ্রান্তে টিকে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, দাঁড়িয়ে হাফসেঞ্চুরির সামনে। চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশন তাই একেবারে মন্দ কাটেনি বাংলাদেশের। লাঞ্চ বিরতিতে যাওয়ার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্বাগতিকদের স্কোর ছিল ৭ উইকেটে ৩২৮।
ক্রিজে ছিলেন ৪৬ রান করা মিরাজ ও ৫ রানে অপরাজিত থাকা তাইজুল ইসলাম।
দ্বিতীয় দিনের প্রথম সেশনে বাংলাদেশ হারিয়েছে ২ উইকেট। আউট হয়ে গেছেন দিন শুরু করা দুই ব্যাটসম্যান সাকিব ও লিটন দাস। দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফেরেন লিটন। সাকিব অবশ্য দারুণ ব্যাটিংয়ে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। টেস্ট ক্রিকেটে ফিরেই নিজেকে চেনালেন এই অলরাউন্ডার। কিন্তু লাঞ্চের আগে ৬৮ রান করে আউট হয়ে গেছেন তিনি।
তার বিদায়ের পর তাইজুলকে সঙ্গে নিয়ে দলের রান বাড়িয়ে নিচ্ছেন মিরাজ।
টেস্টে ফিরলেন ‘পুরনো’ সাকিবই
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার শুরুতে একটু সময় নিয়েছেন সাকিব আল হাসান। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সেরা সাকিবকে পাওয়া শুরু হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শেষ করেছিলেন যেখানে, সেখান থেকেই শুরু করলেন টেস্ট। লম্বা সময় পর ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফেরাটা এই অলরাউন্ডার রাঙালেন হাফসেঞ্চুরিতে। আউট হয়েছেন ৬৮ রান করে।
টেস্ট প্রত্যাবর্তনে পুরনো সাকিবেই পাওয়া গেল। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনের ৩৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শুরু করে তিনি পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৫তম হাফসেঞ্চুরি। এই ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষেই লাল বলে সবশেষ ফিফটি পেয়েছিলেন সাকিব। ২০১৮ সালে মিরপুর টেস্টে খেলেছিলেন ৮০ রানের ইনিংস।
একবছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চট্টগ্রাম টেস্ট দিয়েই ক্রিকেটের লম্বা সংস্করণে ফিরেছেন সাকিব। ১১০ বলে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। রাকিম কর্নওয়ালের বলে ক্রেগ ব্র্যাথওয়েটকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ১৫০ বলের ইনিংসটি তিনি সাজিয়েছেন ৫ বাউন্ডারিতে।
তার বিদায় নেওয়ার আগেই অবশ্য ৩০০ ছাড়িয়েছে বাংলাদেশের সংগ্রহ।
দিনের শুরুতেই লিটনের বিদায়
দ্বিতীয় দিনের শুরুটা একেবারেই ভালো হয়নি বাংলাদেশের। শুরুতেই হারিয়েছে লিটন দাসের উইকেট। দিনের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।
জোমেল ওয়ারিকানের ঘূর্ণি চলছেই। ক্যারিবিয়ান স্পিনারের বলেই বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন লিটন। যাওয়ার আগে প্রথম দিনের সঙ্গে আর মাত্র ৪ রান যোগ করতে পেরেছেন তিনি। আউট হয়েছেন ৩৮ রানে। ৬৭ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ৬ বাউন্ডারিতে।
প্রথম দিন শেষে ওপেনার সাদমান ইসলাম বলে গিয়েছিলেন, সাকিব আল হাসান ও লিটনের ব্যাটে ভালো কিছুর সম্ভাবনা দেখছে বাংলাদেশ। প্রথম দিনের শেষ বিকেলে এই দুই ব্যাটসম্যান যেভাবে ব্যাট করেছিলেন, তাতে আশা করা অস্বাভাবিক ছিল না। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই পথ হারালেন লিটন। ওয়ারিকানের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে ফিরলেন সাজঘরে।