জাপানি মায়ের জিম্মায় থাকবে দুই শিশু জেসমিন মালিকা ও লাইলা লিনা। রোববার ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ হাবিবুর রহমান ভুইয়া দুই শিশুর বাবার করা আপিল খারিজ করে এ আদেশ দেন।
জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকোর আইনজীবী শিশির মনির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের আপিল খারিজ করে মায়ের পক্ষে রায় দিয়েছেন আদালত।
আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জাপানি মা রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। রায়ের ফলে জাপানি শিশুরা মায়ের হেফাজতেই থাকবে।
তবে দুই শিশুর বাবা ইমরান শরীফের আইনজীবী নাসিমা আক্তার বলেন, এ রায়ে তার মক্কেল সংক্ষুব্ধ। তিনি রায় চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন।
গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে বাবা ইমরান শরীফের মামলা খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ইমরানের করা মামলাটি গত ২৯ জানুয়ারি খারিজ করে রায় দেন ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান। এ রায় চ্যালেঞ্জ করে ঢাকার জেলা জজ আদালতে আপিল করা হয়।
জাপান থেকে আসা দুই শিশুর হেফাজত ও অভিভাবকত্ব চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার পারিবারিক আদালতে মামলা করেন বাবা ইমরান শরীফ। মামলায় বাদীপক্ষের তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দেন। বিবাদীপক্ষে সাক্ষ্য দেন জাপানি মা এরিকো।
জাপানের নাগরিক এরিকো ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইমরানের ২০০৮ সালের ১১ জুলাই বিয়ে হয়। তাদের তিনটি সন্তান আছে। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি এরিকোর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করেন ইমরান। একই বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি বড় ও মেজ মেয়েকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তিনি। ছোট মেয়ে জাপানে আছে।
ইমরানের কাছ থেকে দুই মেয়েকে ফিরে পেতে ঢাকায় এসে ২০২১ সালের আগস্টে হাইকোর্টে রিট করেন এরিকো। অন্যদিকে ছোট মেয়েকে ফিরে পেতে পৃথক একটি রিট করেন ইমরান। পৃথক রিটের ওপর শুনানি নিয়ে দুই শিশু তাদের বাবা ইমরানের হেফাজতে থাকবে বলে একই বছরের ২১ নভেম্বর হাইকোর্ট আদেশ দেন। এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন এরিকো, যা চেম্বার আদালত হয়ে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে।
এরিকোর করা আবেদন (লিভ টু আপিল) নিষ্পত্তি করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। আদেশে বলা হয়, ঢাকার পারিবারিক আদালতে থাকা মামলাটি (২০২১ সালে শিশুদের বাবার করা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জাপান থেকে আসা দুই শিশু তাদের মায়ের হেফাজতে থাকবে। শিশুদের বাবা তাদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন।