গত বছর বেসরকারি কোম্পানির উচ্চ পদের চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলাম সন্তানদের সময় দেওয়ার জন্য। ১৫ বছর চাকরি করেছি। চাকরিজীবনের সঞ্চয়ের অর্থ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করেছি। সেই মুনাফার অর্থে নিজের ও সন্তানদের কিছু খরচ চালিয়ে নিচ্ছিলাম। আমাদের মতো চাকরিজীবীরা চাকরি ছেড়ে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার কারণে একটু স্বনির্ভর জীবন যাপন করতে পারি। কিন্তু সেই মুনাফা কমে গেলে হয় আমাকে খরচ কমাতে হবে, নয়তো হাত পাততে হবে। চাকরি ছাড়ার কারণে আমার আয়ের মূল উৎসই এখন সঞ্চয়পত্র। সেই আয়ও নির্ধারিত। কিন্তু খরচ নির্ধারিত নয়।
বাজারে প্রতিনিয়ত সবকিছুর দাম বাড়ছে। সন্তানদের পড়ালেখার খরচও বেড়ে গেছে। করোনার কারণে বেড়েছে চিকিৎসার খরচও। চালডাল থেকে শুরু করে জীবনযাত্রার কোনো খরচেই সরকারের কোনো লাগাম নেই। কিন্তু প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আয়ের পথ সংকুচিত করা হচ্ছে। সঞ্চয়পত্রে কারও ২০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে উৎসে কর কাটার পর মাসে ১৫-১৬ হাজার টাকা পাওয়া যায়। একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে সেই টাকায় কি বিলাসী জীবন যাপন করা যায়? সন্তানদের একটি ভালো স্কুলে পড়াতে হলে মাসে সব মিলিয়ে ২০-৩০ হাজার টাকা লাগে। তাই আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য তাই সঞ্চয়পত্রের আয় ছিল বড় ভরসা। কারণ, ব্যাংকে টাকা রেখে এখন কোনো সুদ পাওয়া যায় না। এদিকে কিছুদিন আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার ওপর উৎসে কর বাড়ানো হয়েছে। এখন মুনাফার হার কমানো হলো। এর ফলে আমরা যাঁরা সঞ্চয়পত্রের আয়ে নিজেদের দৈনন্দিন খরচ চালাই, তাঁরা দুভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হলাম।