ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা হিন্দু-মুসলমান সবাই এক সাথে লড়ব।
একই সঙ্গে তিনি বলেন, আপনারা (ভারত) আমাদের পতাকা আগরতলায় সরকারি হাইকমিশনের গেট ভেঙে সেটাকে টেনে নামিয়ে ছিঁড়েছেন। এটা প্রচণ্ড আঘাত… আমাদের বড় আঘাত দিয়েছে ভারতের সাম্প্রদায়িক শাসকগোষ্ঠী। আমরা কি এটা ভুলে যাব? এটা আমরা কোনো দিন ভুলে যাব না।
বুধবার (০৪ ডিসেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে রক্ষার জন্য আপনারা (ভারত) বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের আন্দোলনকারী মানুষের বিরুদ্ধে, শহীদ মুগ্ধের বিরুদ্ধে, শহীদ আবু সাঈদের বিরুদ্ধে প্রচারণা যেটা চালাচ্ছেন আমাদের শহীদদের বিরুদ্ধেই সেটা যায়… গণতন্ত্রের জন্য আমাদের মহান আত্মাত্যাগ সেই মহান আত্মত্যাগকে আপনারা ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছেন। তাতে কোনো লাভ হবে না।
ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ে হামলা ও জাতীয় পতাকা অবমননার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্টের উদ্যোগে ‘ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দাও’ শীর্ষক এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রা হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে ফ্রন্টের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন সড়ক পর্যন্ত পদযাত্রা করে। এই পদযাত্রায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবও অংশ নেন।
পূজা উদযাপন ফ্রন্টের সভানেত্রী অর্পণা রায়ের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসুর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির মীর সরাফত আলী সপু, অমলেন্দু দাস অপু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের আমীরুল ইসলাম কাগজী, সাঈদ খান, পূজা উদযাপন ফ্রন্টের দেবাশীষ রায় মধু সুরঞ্জন ঘোষ, গৌতম বৈদ্য, জয়দেব প্রমুখ নেতা বক্তব্য দেন।
ভারতের সমালোচনা করে দেশটির নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশ্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করি… রক্ষা করার জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ…. আমরা প্রত্যেকটা দেশের স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেই। কিন্তু ভারতের শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে আমি সস্প্রসারণ চালিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানসহ অন্যান্য দেশ আমরা কবজা করে নেবো… এটা কিন্তু আপনারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ভারতের মিডিয়া আজকে খেয়ে না খেয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে, মিথ্যা সংবাদ দিচ্ছে যার কোনো সত্যতাই নেই। ভারতে যারা সত্যিকারের প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক তারা এসব মিডিয়াকে বলে গদি মিডিয়া। মানে যারা গদিতে আছে তাদের তল্পিবাহক মিডিয়া… একেকটা বয়ান, একেকটা ন্যারেটিভ তৈরি করছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে… কারণ শেখ হাসিনার পতনটা একেবারেই মেনে নিতে পারছে না।