৪ ডিসেম্বর আল্লু অর্জুনের ছবি ‘পুষ্পা ২: দ্য রুল’ ছবির প্রিমিয়ারে সন্ধ্যা থিয়েটারে গিয়েছিলেন ৩৫ বছরের রেবতী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন স্বামী ভাস্কর ও ১৩ বছরের ছেলে শ্রীতেজ। এদিন রাতে শো চলাকালে আল্লু অর্জুন হঠাৎই সন্ধ্যা থিয়েটারে গিয়েছিলেন। আর তখন এই দক্ষিণি তারকাকে দেখার জন্য দর্শকদের মধ্যে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ভিড়ে ঠাসা, আর তখন ধাক্কাধাক্কিতে মাটিতে পড়ে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে রেবতীর মৃত্যু হয়। তাঁর ছেলে শ্রীতেজ গুরুতর আহত হয়ে এখনো চিকিৎসাধীন। আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি পুলিশের অনুমতি না নিয়ে হঠাৎই থিয়েটারে গিয়েছিলেন। এ কারণে চরম বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছিল।
গতকাল রোববার দক্ষিণি তারকা আল্লু অর্জুনের হায়দরাবাদের বাংলোয় ভাঙচুর করেছে একদল দুষ্কৃতকারী। সন্ধ্যা থিয়েটারে রেবতী নামের এক নারীর মৃত্যুর বিচার চাইতে এ হামলা চালিয়েছে তারা। এ ঘটনার পর আল্লু অর্জুনের ছেলে–মেয়ে আল্লু অয়ান ও আল্লু অরহাকে তাদের দাদার বাসায় পাঠানো হয়েছে। সন্তানদের সুরক্ষার কারণে তাদের নিরাপদ স্থানে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আল্লু অর্জুন।
আল্লু অর্জুনের বাসায় হামলাকারীদের শনাক্ত করেছে পুলিশ। তাদের বলেন, ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ অ্যাকশন কমিটির (জেএসি) আট সদস্য জোরপূর্বক আল্লু অর্জুনের বাসায় ঢুকে ভাঙচুর করেছে। পুলিশ এই আটজনকে গ্রেপ্তার করে থানায় রেখেছে। এর মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
এক ভিডিওতে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা আল্লু অর্জুনের বাংলোর ভেতর ঢুকে তাঁর বাড়ির ভেতরের ফুলের টব ভাঙচুর করেছে। এই দক্ষিণি তারকার বাসা লক্ষ্য করে আক্রমণকারীরা টমেটো ছুঁড়েছে। আল্লু অর্জুনের বিরুদ্ধে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছে। এই প্যান ইন্ডিয়া তারকার বাংলোর নিরাপত্তারক্ষীরা হামলাকারীদের বাধা দিতে গেলে তুমুল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, আল্লু সেই সময় বাসায় ছিলেন না।
তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেভান্থ রেড্ডি আল্লু অর্জুনের বাসায় এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে বিক্ষোভকারীরা আল্লু অর্জুনের বাসার বাইরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিল। এই দক্ষিণি তারকার বাসার কিছু সম্পত্তি তারা নষ্ট করেছে। আল্লুর বাসা লক্ষ্য করে তারা টমেটো ছুড়েছে বলে অভিযোগ।
তাদের দাবি ছিল, সন্ধ্যা থিয়েটারে পদদলিত হয়ে রেবতীর মৃত্যুর জন্য আল্লু অর্জুনকে এক কোটি রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া কিছু ভিডিওতে দেখা গেছে গাড়ির মধ্যে আল্লুর দুই সন্তান অরহা ও অয়ানকে। মেয়ে অরহার চোখে–মুখে বিরক্তির ছাপ দেখা গেছে। জানা গেছে, তারা তাদের দাদা আল্লু অরবিন্দের বাসায় গিয়েছে। আল্লু অর্জুন এখন পর্যন্ত তাঁর বাসায় হামলা ও বিক্ষোভ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
গত রোববার রাতে আল্লু অরবিন্দ তাঁর ছেলের বাসায় হামলা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন। আল্লু অরবিন্দ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। খ্যাতনামা এই চিত্রনির্মাতা সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আজ আমাদের বাড়িতে যা কিছু ঘটেছে, তা সবাই দেখেছেন। এখন সময় এসেছে আমাদের এর হিসাব অনুযায়ী কাজ করার। এখন কোনো বিষয়ের ওপর প্রতিক্রিয়া জানানোর জন্য সঠিক সময় নয়।’