কুমিল্লার লাঙ্গলকোটে গ্যাস বেলুন বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ৪১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো আসিফ ইমরান। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে লাঙ্গলকোট উপজেলার মোকরা ইউনিয়নের বিরলী গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেবদাস দেব বলেন, বিস্ফোরণের ঘটনায় মোট ৪১ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৮ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও কুমিল্লা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গুরুতর আহতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- বিরলী গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৪০), তাঁর ৬ বছরের মেয়ে মরিয়র আক্তার, একই গ্রামের সাব্বির হোসেন, আফনান (৮), পাশের পশ্চিম বামপাড়া গ্রামের ইমন হোসেন (১৫), বিরলী গ্রামের সম্রাট (৯), নিসু আক্তার (১০), আবদুর রব (২৭), নাঈম হোসেন (১৫), বাছির (১৩), পপি (১০), রুবি (১০)।
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার ঢালুয়া ইউনিয়নের মোঘরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রতি বাংলা সনের মাঘ মাসের ১ তারিখ ঠাণ্ডাকালি মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সে হিসেবে আগামী শনিবার সেখানে মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ওই মেলায় বিরলী গ্রামে মৃত কালা মিয়ার ছেলে আনোয়ার হোসেন গ্যাস বেলুনের ব্যবসা করেন। বৃহষ্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে বেলুনে ভরার গ্যাসে বিস্ফোরণ ঘটে।
এতে পাশে বসে থাকা অন্তত ৪১ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু। এছাড়া বিভিন্ন বয়সের ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
আনোয়ারের বোন ফারজানা আক্তার বলেন, ‘আমার ভাই বেশ কয়েক বছর ধরে মেলাতে পাইকারি বেলুন দিয়ে থাকে। পাশাপাশি তিনি নিজেও বেলুন বিক্রি করে। আমার ভাই-ভাতিজির অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া পরিবারের আরো বেশ কয়েকজনও গুরুতর আহত হয়েছে।’
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হবে।’
নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেবদাস দেব আরো বলেন, এ ঘটনায় ৫/৬ জন অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি হয়েছে স্প্লিন্টার ইনজুরি। এছাড়া অনেকে ব্লাস্ট ইনজুরিতে আহত হয়েছে। অনেকের হাত-পা ভেঙে গেছে।’
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো আসিফ ইমরান বলেন, ‘আমাদের এখানে পর্যন্ত অন্তত ২০ জনের মতো ভর্তি হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই শিশু। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা সকলে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।’