করোনা ও এমপক্সের পর এবার নতুন ভাইরাস হিউম্যান মেটোপনিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) সংক্রমণ রোধে বেনাপোল ইমিগ্রেশনে সতর্কাবস্থা জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ।
ভাইরাসটি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে দেখা দিয়েছে। এর হাত থেকে সুরক্ষা পেতে বৃহস্পতিবার ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মাস্ক পরাসহ বিভিন্ন সচেতনমূলক পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ভারত বাংলাদেশের মধ্যে চলাচলকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীসহ সকল জনসাধারনকে। এইচএমপিভি ভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য জোর দিয়েছেন বেনাপোল ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
তথ্য মতে জানা যায়, ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ এই ৯ বছর ধরে কোন না কোন ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হয়েছে বিশ্ব। তারপরও ৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিস্তার করা করোনাভাইরাসের ব্যাপক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আবারও দেখা দিয়েছে এইসএমপিভি নামের আর একটি ভাইরাস।
এইচএমপিভি প্রথম শনাক্ত হয়েছিল ২০০১ সালে নেদারল্যান্ডসে। দুই বা তার বেশি মানুষের মধ্যে সরাসরি সংযোগের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়ায়। এ ছাড়া সংক্রমিত স্থান স্পর্শ করলে তা থেকেও ভাইরাসটি ছড়ানোর ঝুঁকি থাকে। স¤প্রতি সংক্রমণ ছড়িয়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতেও। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে চীনে এইচএমপিভি ভাইরাস ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেটি জাপান, মালয়েশিয়া ও হংকংয়ে সংক্রমণ ধরা পড়ে।
এসব যাত্রীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে ভাইরাসটি সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায় বেনাপোল ইমিগ্রেশন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম করা হচ্ছে। মাস্ক পরা, নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান, সর্দি, কাশি ও জ্বর থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শের অনুরোধ করছেন ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। আতঙ্কিত না হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে সংক্রমণ এড়িয়ে নিজেকে ও দেশকে সুরক্ষিত রাখা যাবে বলছেন তারা।
ভারত থেকে ফিরে আসা পাসপোর্টধারী যাত্রী বাদল চন্দ্র জানান, তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে গিয়েছিলেন, ফেরার পথে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন এইচএমপিভি ভাইরাসের পরীক্ষা না করলেও বেনাপোল ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ তাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। এবং ভাইরাসটি থেকে নিরাপদ থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছেন।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ আহসানুল কাদের ভূঁইয়া জানান, ভাইরাস সংক্রমণ রোধে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ সতর্ক রয়েছে। ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারীদের কেউ আক্রান্ত কিনা তা পরীক্ষা করছেন ইমিগ্রেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগের উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার আব্দুল মজিদ জানান, বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে এইচএমপিভি সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলোক একটি চিঠি হেড অফিস থেকে আমাদের কাছে এসেছে। আগে থেকে আমরা ভারত থেকে আসা পাসপোর্টধারীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে যাচ্ছি।
এ নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এইচএমপিভি ভাইরাসের আগে বেনাপোল ইমিগ্রেশন স্বাস্থ্য বিভাগে মাঙ্কিপক্স, ওমিক্রন, করোনা, নিপা ও জিকা ভাইরাস রোধেও সতর্কতা নেয়া হয়েছিল।