দ্বিতীয় দফায় ১৩ ঘণ্টার আল্টিমেটাম শেষে ফের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা।
কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার মধ্যে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে সড়কের দুপাশে আটকা পড়েছে কয়েকশ’ যানবাহন।
অবরোধের কারণে সকাল থেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন বরিশালসহ, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পায়রা বন্দর ও কুয়াকাটাগামী যাত্রীরা।
এর আগে শুক্রবার রাতে রনি ও ফিরোজ নামে দুই পরিবহন শ্রমিককে গ্রেফতার করে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় এরা জড়িত ছিল বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম।
তবে আন্দোলনকারীরা বলছেন, এই গ্রেফতারের ব্যাপারে আমরা অবগত নই। আমরা আমাদের ৩ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলন করছি। দাবি পূরণ হলেই আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবো।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের অন্যতম নেতা মাহামুদুল হাসান তমাল জানান, প্রশাসন অনেকটাই গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছে; সেজন্য আমাদের মৌলিক অধিকারের জায়গা থেকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। আর সড়ক অবরোধের কারণে জনগণের যে ভোগান্তি হচ্ছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, তবে এ ছাড়া আমাদের কিছু করার নেই।
আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
আবার সে অভিযোগে ঘটনার সঠিক বিবরণ না দিয়ে শুধুমাত্র জখমের কথা উল্লেখ করা হয়। যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
গত মঙ্গলবার দুপুরে রুপাতলী বিআরটিসি বাস কাউন্টারে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে। এরপর রাতে রুপাতলী হাউজিং এলাকার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মেসে হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে।
এসময় ১১ শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার প্রতিবাদ ও এ ঘটনায় মামলা দায়েরসহ হমলাকারীদের গ্রেফতার দাবিতে বুধবার সকাল থেকে ঢাকা কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। ১০ ঘণ্টা পর প্রশাসনের আশ্বাসে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয়।
এ হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মামলা দায়েরের পর সেই মামলা প্রত্যাখ্যান করে পুনরায় শুক্রবার সড়ক অবরোধ ও মশাল মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে পুনরায় ১৩ ঘণ্টা আল্টিমেটাম দেন তারা।