পটুয়াখালী-বরিশাল মহাসড়কের লেবুখালীর পাগলায় ইউনিভার্সিটি স্কয়ারের যুদ্ধ বিমানটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। লেবুখালীর নির্মাণাধীন পায়রা সেতুর টোল প্লাজার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গতকাল শনিবার বিকেলে পায়রা সেতু অ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণের অযুহাতে আকস্মিক ভাবে এয়ারক্রাফ্টটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। পায়রা সেতুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দু’টি বিশাল আকৃতির স্ক্যাভেটর ব্যবহারে প্রকাশ্যে বিমানটি ভেঙ্গে ফেললেও এর দায় নিতে চাচ্ছেন না কেউ। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরেও স্থাপনাটি সড়িয়ে না নেয়ায় তারা নির্মাণ কাজের স্বার্থে স্থানান্তর করতে বাধ্য হয়েছেন। অপর দিকে বিশ^বিদ্যালয় কর্তপক্ষ বলছেন, এয়ারক্রাফ্টটি বিমান বাহিনীর সম্পদ। এটির শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষন করছে বিশ^বিদ্যালয়। সেতু কর্তৃপক্ষের চিঠির আলোকে বিমান বাহিনীকে জানানো হয়েছে। বিমান বাহিনীর নির্দেশনা অপেক্ষা না করেই সেতু কর্তৃপক্ষ কাউকে না জানিয়ে এটি ভেঙ্গে ফেলেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পটুয়াখালী জেলার প্রবেশ দ্বার লেবুখালীর পাগলায় নির্মিত ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক যুদ্ধবিমানটি আকস্মিক ভেঙ্গে ফেলায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও বিমান বাহিনীর উর্ধতন কর্মকর্তারা বিস্মিত হয়েছেন। রবিবার বেলা দেড় টায় পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো: মতিউল ইসলাম চৌধুরী, শেখ হাসিনা সেনানীবাসের জেওসি, বিমান বাহিনীর গ্রæপ ক্যাপটেন জিএম, আলী হায়দার ও পবিপ্রবি’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্তসহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন। পায়রা সেতুর টোল প্লাজা ও এ্যাপ্রোজ সড়ক নির্মাণ কাজের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের যথাযথ অনুমোদনে ব্যতিরেকে এটি ভেঙ্গে ফেলা অত্যন্ত দু:খজনক অভিহিত করে এটি সংস্কার করত: পুণ:স্থাপনে করার সম্ভাব্যতা নিরুপণের লক্ষ্যে বিমান বাহিনীর ৩সদস্যের টিম কাজ শুরু করেছে বলে তারা উপস্থিত জনতাকে আশ^স্ত করেন।
পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্প পরিচালক (পিডি) প্রকৌশলী আবদুল হালিম বলেন, ইতোমধ্যে এয়ারক্রাফ্টটি স্থানান্তরের জন্য অফিসিয়ালি পবিপ্রবি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত বলেন, আজকে বিশ^বিদ্যালয় স্কয়ারটি ভেঙ্গে ফেলা হবে তা জানানো হয়নি। আমরা কিছুই জানিনা। এ বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে জানানো হবে। এদিকে পায়রা সেতুর উন্নয়ন কাজের নামে বিশ^বিদ্যালয় স্কয়ারের যুদ্ধ বিমানটি ভেঙ্গে ফেলায় পবিপ্রবি’র শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দা জানিয়েছে। অনেকেই বলছেন, পটুয়াখালীতে প্রবেশের সময় এটা একটি ঐতিহ্য ও সৌন্দর্যের প্রতীক ছিল। শাহরিয়ার নাইম নামে একজন তার ওয়ালে লিখছেন-লেখাটি হুবহুব তুলে ধরা হলো, ইউনিভার্সিটি স্কয়ায় যদি পায়রা সেতুর কাজের জন্য সরানোর দরকারই হয়, প্রশাসন তো অবশ্যই জানে এ ব্যাপারটা। তারা তো একটু বিমানবাহিনীর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে পারতো, অক্ষতভাবে কীভাবে এটা সরানো যায়। এইভাবে প্লেনটা সরানোর কী মানে??? আমার মনে হয় প্লেনটা ভেঙে ফেলাটা পবিপ্রবিয়ানের অস্তিত্বে লেগেছে এবং যারা এইটা তৈরিতে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, তারাও বিষয়টি ভালভাবে নেননি। এতে ইউনিভার্সিটির ভাবমূর্তি অবশ্যই ক্ষুন্ন হয়েছে ও প্রশাসনের দায়িত্বজ্ঞানকেও প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এছাড়াও অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, এভাবে না ভেঙে এটা সুন্দরভাবে সুরক্ষিত রেখে অপসারণ করে অন্যত্র সরানো যেতে পারতো। পরে কোথাও এটা বসানো যেত।