সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিদেশিদের চাপে নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ ভদ্র সাজার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, যা আরেকটি নিবর্তনমূলক আইনেরই নামান্তর। এটি করে সরকার জনগণকে বোকা বানাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গতকাল সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর বিষয়ে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য কালো আইন ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনটি পুরোপুরি বাতিল করতে হবে। এটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী আইন।
ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আলোচনা করে আইন প্রণয়ন করবে এটা আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আশা করি না। আওয়ামী লীগের চরিত্র আমরা জানি। অনেকে মনে করেন আওয়ামী লীগ ভালো কাজ করবে, কিন্তু গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের ক্ষেত্রে তারা সব সময় নিয়ন্ত্রণ করেছে। এটা নতুন নয়, ১৯৭৫ সাল থেকে এই কাজ করে আসছে তারা।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চাপের কারণে এখন তারা বাকশাল কিংবা একদলীয় শাসন বলতে পারছে না। ওপরে মোড়কটা পরিবর্তন করলেও ভেতরে ঘটনা তাই ঘটছে।
গণভবনে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি যেন নির্বাচন করতে না পারে তার সব রকমের ব্যবস্থা সরকার করছে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করে আটকে রাখা, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির যেসব অধিকার রয়েছে তা থেকে বিরত রাখা, সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের আবার ক্ষমতায় যাওয়ার পথকে প্রশস্ত করতে রাষ্ট্রকে ব্যবহার করা হচ্ছে।
নেতাকর্মীদের হাইকোর্ট থেকে জামিন এবং আবার জেলগেট থেকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হাইকোর্টের দুই বিচারক বলেছেন তারা কতটা অসহায়। তাদের কথা কেউ শোনে না। তারা আদেশ দেন গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু গ্রেপ্তার তো করেই, সঙ্গে রিমান্ডেও পাঠায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকার অনৈতিক, অসাংবিধানিক, বেআইনি ফরমায়েশি রায় দিয়ে বিরোধী রাজনীতিকে নির্মূল করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে এতে অংশ নেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।