এবার নাশকতা মামলার আসামি ইউপি চেয়ারম্যান মতিউর রহমান রাজার জামিন করালেন বরগুনা-১ আসনের এমপি ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু।
মঙ্গলবার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আসামির পক্ষে অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু নিজে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে এমপি শম্ভুর জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক রাসেল মজুমদার।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান।
আদালতের তথ্য সূত্র জানায়, ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু মঙ্গলবার মতিউর রহমান রাজার পক্ষে জামিন আবেদন করেন। জামিন শুনানিতে শম্ভু অংশ না নিলেও তাঁর পক্ষে ছেলে সুনাম দেবনাথ ও আইনজীবী তানজিবুল ইসলাম সুজন অংশ নেন।
শুনানি শেষে দুটি মামলায়ই ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জিম্মায় পরবর্তী ধার্য তারিখ ১০ জানুয়ারি ও ২৯ জানুয়ারি (পৃথক দুটি মামলায়) পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। অ্যাডভোটেক ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বরগুনা জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য।
জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘গত দুই মাসে আমাদের ১৪৭ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে কয়েকদিন আগে মাত্র ৫ জনের জামিন হয়েছে। তাও প্রায় একমাস জেল খেটে। মতিউর রহমান রাজার মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে জামিন হওয়ার বিষয়টি আমাদের অবাক করেছে।
’সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টি মামলার আসামিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর জামিন করানো প্রসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা মোবাইল ফোনে বলেন, ‘এটা একান্তই তার (এমপি শম্ভুর) ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, দলীয় কোনো সিন্ধান্ত নয়। বিষয়টিতে আমরা বিব্রত, যারা নির্বাচন বন্ধ করতে চায়, নির্বাচন প্রতিহত করে, তাদের সাথে একমত হওয়া তো আমার রাজনীতি থাকে না।
এ বিষয়ে জানতে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।
মতিউর রহমান রাজা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান। গত ইউপি নির্বাচনে বিএনপি-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়লাভ করেন।
তিনি জেলা বিএনপির (নজরুল-হালিম কমিটি) সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি প্রার্থী।
গত নভেম্বর মাসে সরকার পতন আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে শতাধিক বিএনপি নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সদর থানায় দুটি মামলা করেছিল। নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টার মামলাটিতে মতিউর রহমান রাজা এজাহারভুক্ত আসামি।
গত রবিবার সন্ধ্যায় সদরের গৌরিচন্না ইউনিয়নে গৌরিচন্না মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে নৌকা মার্কার জনসভায় বক্তব্য দিয়ে নৌকার পক্ষে ভোট চান এই ইউপি চেয়ারম্যান।
এরপর সোমবার বিকেল তিনটার দিকে বদরখালী ইউনিয়নের বাওয়ালকর এলাকা থেকে রাজাকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। মামলায় নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা ও বিষ্ফোরক দ্রব্য ব্যবহারের অভিযোগে করা পৃথক দুটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।