সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের একটি মন্তব্যের (কমেন্ট) জেরে সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ ছাত্রাবাসে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে কলেজ ছাত্রাবাসের ১ম ব্লকে এ ঘটনা ঘটেছে।
আহতদের একজন মিজানুর রহমান রিয়াদ। তিনি এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার সহ-তথ্য প্রযুক্তি সম্পাদক। তিনি ওই ব্লকের ১১১নং কক্ষের বাসিন্দা। পরে আহত অবস্থায় রিয়াদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রিয়াদ ও তালামীয এটি কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের হামলা বলে দাবি করলেও ছাত্রশিবির এটি অস্বীকার করছে। তারা বলছে, এরকম কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে শিবিরের দূরতম সম্পর্ক নেই। ঘটনাটিতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছে সংগঠনটি।
এদিকে, আহত আরেকজন ওই ব্লকের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম হৃদয়। তিনিও সিলেটের একটি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ছাত্রাবাসের ওই ব্লকের শিক্ষার্থীদের থেকে জানা যায়, বুধবার মধ্যরাতে ওই ব্লকের ৩ জন শিক্ষার্থী রিয়াদের রুমে প্রবেশ করেন৷ তখন তারা তার কাছে একটি পোস্টের কমেন্টের ব্যাপারে জানতে চান। সেখানে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হলে একপর্যায়ে বিষয়টি হাতাহাতিতে রূপ নেয়। পরে সেখানে আরও ২/৩ জন প্রবেশ করে রিয়াদকে মারতে থাকেন এবং রিয়াদও প্রাণপণ চেষ্টা করেন ফিরিয়ে দিতে। একপর্যায়ে একজন রিয়াদকে ধাক্কা দিলে তিনি দরজার ছিটকিনিতে পড়ে পায়ে আঘাত পায় আর এতে রক্তক্ষয় হয়। পরে ছাত্রাবাসের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এস আহত অবস্থায় রিয়াদকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এর আগে কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি নিউজের কমেন্টে রিয়াদ লিখেন, ‘‘কীসের জন্য এত ত্যাগ করলাম। দিনের বেলা পুলিশের টিয়ারশেল আর লাঠিচার্জ। রাতে পালিয়ে থাকলাম। সন্ত্রাসমুক্ত ক্যাম্পাসের স্বপ্নে এত ছাত্র প্রাণ দিল। এখন যদি গুপ্ত সংগঠনের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে বসেন তাহলে এই ত্যাগের মূল্য কী।’’
আহত শিক্ষার্থী রিয়াদ জানান, ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে তার ওপর হামলা করা হয়েছে। হামলাকারীররা এমসি কলেজ শিবির কর্মী। জানতে চাইলে রিয়াদ একটি সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, ফেসবুকের একটি কমেন্টের জেরে শিবিরের কর্মীরা আমার ওপর হামলা করেছে। এসময় প্রতিবেদককে কয়েকজনের নামও বলে তিনি।
এ বিষয়ে এমসি কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইসমাইল খান একটি সংবাদ মাধ্যম কে বলেন, এ ঘটনায় শিবিরের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। দুই শিক্ষার্থীর মাঝে তর্কের জেরে এরকম ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটিতে তৃতীয় পক্ষের ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জুলাই বিপ্লবের পর থেকে দেখে আসছি, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর তালামীয নেতাকর্মীরা ছাত্রশিবিরের কর্মকাণ্ডকে মেনে নিতে পারছে না বরং উল্টো পালিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কলেজ ক্যাম্পাসে গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, যার অংশ হিসেবে অভিযোগকারী ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করছেন এবং তার সাথে যুক্ত হয়ে ফ্যাসিস্ট ছাত্রলীগ ও তাদের দোসর এবং তৃতীয় একটি পক্ষ রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য তিলকে তাল বানিয়ে ছাত্রসমাজকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে।