করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে স্কুল-কলেজ। দেশে মহামারি করোনার দ্বিতীয় আঘাতের কারণে চলতি বছরের জুনে এসএসসি ও সমমান এবং জুলাই-আগস্টে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা নেওয়ার কথা থাকলেও নেওয়া সম্ভব হয়নি। যদিও সরকার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে, এবার উভয় পরীক্ষায় গ্রুপভিত্তিক নৈর্বাচনিক তিন বিষয়ের পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে, অ্যাসাইনমেন্ট ও সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফলাফল প্রণয়ন করা হবে।
গত ১২ আগস্ট শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য সরকার সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে।
এদিকে এসএসসি-এইচএসসি ছাড়াও চলতি বছরের বিভিন্ন শ্রেণির কোনো পরীক্ষাই নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছরও ক্লাসে পাঠদান হয়নি। তাই বিপাকে রয়েছেন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। তবে পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরীক্ষার্থীকে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু করে গত ১৮ জুলাই থেকে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকেই এই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।
অ্যাসাইনমেন্ট বিষয়ে গত ১৫ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, অ্যাসাইনমেন্ট ঠিকঠাকভাবে করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হবে। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি আর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সব বিষয়ের ফল দেওয়া হবে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’-এর মাধ্যমে। আর পরীক্ষা নেওয়া গেলে নৈর্বাচনিক বাদে বাকি সব বিষয়ে গ্রেড দেওয়া হবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে।
গতকাল (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক বলেছেন, শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে, তবে আবারও যদি করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পায় তবে আগের মতো অ্যাসাইমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে।
সরকারি বরিশাল কলেজ মিলনায়তনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা এবং অ্যাসাইনমেন্টবিষয়ক মতবিনিময় সভায় মাউশি ডিজি বলেন, শিগগিরই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের করোনার টিকার আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চালু করার বিষয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের হোস্টেল ব্যবস্থাপনা করে, টিকা দিয়ে সেগুলো খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বরিশাল অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর মোয়াজ্জেম হোসেন। সভায় বরিশাল জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ার হোসেনসহ সব সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও একাডেমিক সুপারভাইজাররা উপস্থিত ছিলেন।