বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিপরীতে সদর উপজেলার কর্ণকাঠী এলাকার মেস থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই শিক্ষার্থীর নাম বৃষ্টি সরকার (২২)। নিহত বৃষ্টির বাড়ি সাতক্ষীরায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি সাতক্ষীরার মধূসুদন সরকারের মেয়ে।
সহপাঠীরা জানিয়েছেন, কর্ণকাঠী এলাকায় ছয়তলা মেসের একটি কক্ষে বৃষ্টি একাই থাকতেন। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে সহপাঠীরা তার কক্ষে যান। এ সময় ডাকাডাকি করে সাড়াশব্দ না পেয়ে কক্ষের জানালা দিয়ে বৃষ্টিকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখে চিৎকার দেন। বিষয়টি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষকদের জানানো হয়। তাদের পরামর্শে কক্ষের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেন। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বৃষ্টির একাধিক সহপাঠী জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রেমিকের সঙ্গে মনোমালিন্য চলছিল। তাদের ধারণা, ওই মনোমালিন্য থেকেই বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা বলেন, ওই ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মেস ভাড়া করে থাকতো। রাতে আমাকে ফোন করে শিক্ষার্থীরা জানায় বৃষ্টি ফ্যানের সঙ্গে ঝুলছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য বলি। সেই মোতাবেক শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের নিশ্চিত করেছেন চিকিৎসক। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছে, সে সম্পর্কে এখনও কিছু জানতে পারিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের রুটিন দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ছাত্রীর আত্মহত্যার কথা শুনে হাসপাতালে যাই। তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা যাতে আর না ঘটে, সেজন্য শিক্ষার্থীদের কাউন্সিলিং করা হবে। এমন একটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেলো।
তিনি এসময় আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর একটি পরিবার। আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখার বিষয়ে নিয়মিত কাউন্সেলিং করে থাকি। তারপরও এমন একটি ঘটনা সত্যি দুঃখজনক।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের বন্দর থানার ওসি এম আর মুকুল বলেন, ওই ছাত্রীকে কেউ আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে কিনা, কিংবা বাধ্য করেছে কিনা তা নিয়ে তদন্ত চলছে। পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে গিয়েছে। পরিবার মামলা দিলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।