1. [email protected] : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. [email protected] : Maharaj Hossain : Maharaj Hossain
  3. [email protected] : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  4. [email protected] : অনলাইন : Renex অনলাইন
প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে উঠে এলো কোরআনের সত্যতা! - Dainik Deshbani
সোমবার, ১০ মার্চ ২০২৫, ০৩:০৪ পূর্বাহ্ন

প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে উঠে এলো কোরআনের সত্যতা!

Maharaj Hossain
  • রবিবার, ৯ মার্চ, ২০২৫

সামুদ জাতি শিল্প ও সংস্কৃতিতে পৃথিবীতে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিল। আদ জাতির পর আল্লাহ তাআলা তাদের পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধি দান করেছিলেন। কিন্তু তাদের জীবনযাপনের মান যতটা উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছেছিল, মানবতা ও নৈতিকতার মান ততই নিম্নগামী হয়েছিল।

একদিকে উন্মুক্ত প্রান্তরে পাথর খোদাই করে করে প্রাসাদের পর প্রাসাদ তৈরি হচ্ছিল, অন্যদিকে সমাজে পাপ কাজের প্রসার ঘটছিল। ন্যায়-ইনসাফ বলে সে সমাজে কিছুই ছিল না। অন্যায় ও অবিচারে সমাজ জর্জরিত হতে থাকে। সমাজে চরিত্রহীন লোকের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই সময় হজরত সালেহ (আ.) যে সত্যের দাওয়াত দিয়েছেন, তাতে সাধারণ শ্রেণির লোকেরাই বেশি সাড়া দিয়েছিল।

কিন্তু চরিত্রহীন লোকদের নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় প্রবল ক্ষমতাধর সামুদ জাতি আল্লাহ তাআলার আজাবে ধ্বংস হয়েছিল। সেই আজাব থেকে আল্লাহ তাআলা হজরত সালেহ (আ.) ও তার সঙ্গী ইমানদারদের রক্ষা করেছিলেন।

গগনবিদারী আওয়াজ সামুদ জাতির কর্ণকুহরে আঘাত হানে। সেই আওয়াজে তারা নিজ নিজ গৃহে উপুড় হয়ে পড়ে থাকে। একসময় যে জাতি পাহাড়ে ঘর নির্মাণ করত, পৃথিবীতে যাদের চেয়ে শক্তিশালী কোনো জাতি ছিল না, তারাই আসমানি আজাবে মুখ থুবড়ে পড়ে যায়। উদ্ধত সামুদ জাতির প্রতি হজরত সালেহ (আ.)-এর হুঁশিয়ারি বাস্তবায়িত হয়েছিল। হঠাৎ একদিন প্রচণ্ড শব্দে ভূমিকম্প তাদের নাস্তানাবুদ করে ফেলে। এবং বজ্রপাতের ভয়ংকর শব্দে মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত ও আতঙ্কিত হয়ে যায়। অবশেষে তাদের মৃত্যু ঘটে।

হিজর ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় আবাসস্থল। তার ধ্বংসাবশেষ মদিনার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমান শহর আল উলা থেকে কয়েক মাইল ব্যবধানে তা দেখা যায়। মদিনা থেকে তাবুক যাওয়ার পথে এই স্থান প্রধান সড়কের উপরেই রয়েছে। এই উপত্যকার উপর দিয়ে কাফেলা চলাচল করতো। কিন্তু রাসুল (সা.)-এর নির্দেশ অনুযায়ী কেউ এখানে অবস্থান করে না।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতি ও তাদের ধ্বংসাবশেষ নিয়ে গবেষণা এবং পেট্রা শহরের সাথে তাদের সম্পর্কিত ধারণাটি এক গভীর ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় আলোচনার অংশ। সামুদ জাতি সম্পর্কে কোরআনে যে বিবরণ দেওয়া হয়েছে, তা হলো তারা পাহাড় কেটে ঘরবাড়ি নির্মাণ করত।

পেট্রা শহর, যা আধুনিক জর্ডানে অবস্থিত, তার স্থাপত্য এবং ধ্বংসের ধরন সামুদ জাতির কোরআনে বর্ণিত বৈশিষ্ট্যের সাথে মিল খুঁজে পাওয়া যায়। পেট্রা একটি প্রাচীন নাবাতীয় শহর যা লাল পাথরের মধ্যে খোদাই করে তৈরি করা হয়েছিল। এটি ১৮১২ সালে ইউরোপীয় প্রত্নতাত্ত্বিকরা পুনরায় আবিষ্কার করেন। এর ঘরবাড়ি ও অন্যান্য স্থাপত্য কাঠামো যে পদ্ধতিতে তৈরি, তা কোরআনে বর্ণিত সামুদ জাতির বর্ণনার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়।

তবে কয়েকটি বিষয় গবেষকদের মধ্যে বিতর্ক তৈরি করেছে : যেমন- সময়কাল নিয়ে বিতর্ক : সামুদ জাতির সময়কাল কোরআন ও অন্যান্য ইসলামি সূত্রে যে সময়ে বর্ণিত, তা পেট্রার প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে নির্ধারিত সময়কাল থেকে ভিন্ন। তবে প্রত্নতাত্ত্বিক সময়কাল নির্ধারণ পদ্ধতিতে ভুল বা অনিশ্চয়তা থাকার বিষয়টি এখানে বিবেচ্য হতে পারে বলে মত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।

কোরআনে সামুদ জাতির ধ্বংসের কারণ হিসেবে আল্লাহর শাস্তি উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে পেট্রা ধ্বংসের কারণ হিসেবে ভূমিকম্প বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা বলা হয়েছে। পেট্রা ও সামুদ জাতির মধ্যে সম্পর্ক নিশ্চিত করতে হলে আরও প্রত্নতাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় প্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে বলেও মতো বিশ্লেষকদের।

তবে কোরআনে ১৪০০ বছর আগে এসব জাতির ধংসের যে বর্ণানা দেওয়া হয়েছে, তার সাথে নতুন প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কার সেই ধংসের ধরনের হুবহু মিল খুঁজে পাচ্ছে।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৫ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব