শুক্রবার সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শম্ভুর পক্ষে আমতলী পৌরসভার এক কাউন্সিলরের নারীদেরকে টাকা বিতরণের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। তবে টাকা বিতরণকে ‘সমাবেশের জন্য না, ‘দান’ হিসেবে দাবি করেছেন ওই কাউন্সিলর।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় টাকা বিতরণের হওয়া ভিডিওটি এই প্রতিবেদকের কাছে আসে। সেখানে দেখা যায়, আমতলী পৌরসভা মিলনায়তনে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মীর নারীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে টাকা বিতরণ করছেন। তার পিছনেই রয়েছে বরগুনা-০১ আসনে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ব্যানার। এসময় সেখানে আরেকজন নারী কাউন্সিলর ও উপস্থিত ছিলেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় চাওড়া ইউনিয়নে আওয়ামীলীগ প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রচারণা সমাবেশকে সামনে রেখে সেখানে নারীদেরকে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বৃহস্পতিবার আমতলী পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠোন বৈঠক করা হয়। বিকেলে উঠোন বৈঠক শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমতলীর পৌর মেয়র মতিয়ার রহমানের বাসভবনের নিচে উপজেলা আওয়ামী লীগের নৌকার প্রচার কার্যালয়ে ডেকে শতাধিক নারীকে নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে টাকা বিতরণ করেন পৌর কাউন্সিলর ও আমতলী পৌর সভার প্যানেল মেয়র হাবিবুর রহমান মীর। এসময় টাকা বিতরণের প্রমান রাখার জন্য সকলের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়।
ওই সভায় উপস্থিত থেকে টাকা নিয়েছেন এমন কয়েকজন নারী পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার (আজ) চাওড়া ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর প্রচার সভায় মিছিল নিয়ে উপস্থিত থাকতে তাদেরকে টাকা দেওয়া হয়েছিলো। কয়েকজন নারী অভিযোগ করে বলেন, এসময় ছবি তুলতে না চাইলেও তারা টাকা বিতরণের ছবি তুলে রাখেন যাতে আমরা অন্যকারো প্রচার সভা কিংবা মিছিলে গেলে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে।
বরগুনা-০১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন, এটা খুবই লজ্জাজনক ব্যাপার। ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর জনসভায় নারীদেরকে টাকার বিনিময়ে উপস্থিত করানো হয়, এর চেয়ে অধপতন আর কি হতে পারে। নারীদেরকে প্রার্থীর টাকা দিয়ে বিভিন্ন সমাবেশে নিচ্ছেন আমতলী পৌরসভার মেয়র, এমন অভিযোগ আমি আগেও পেয়েছি। একদিকে তারা পেশি শক্তি ব্যবহার করে ভোটারদের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। অন্যদিকে কালো টাকার বিনিময়ে লোক দেখাচ্ছে। বিষয়টি আমি নির্বাচন কমিশনকে অবহিত করব।
এবিষয়ে পৌর কাউন্সিলর হাবিবুর রহমান মীর এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একজন কাউন্সিলর আমি প্রায় গরীব মানুষের মধ্যে আমার পক্ষ থেকে টাকা বিতরণ করি। এখানেও আমার পক্ষ থেকে টাকা বিতরণ করা হয়েছে। নির্বাচন চলাকালীন সময় টাকা দেওয়ার বিষয়টি আচরণ বিধির লঙ্ঘন তিনি জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি মোবাইল ফোনের লাইনটি কেটে দেন।
এবিষয়ে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, যদি টাকা দেয়ার সময় আমরা হাতেনাতে ধরতে পারতাম তবে ভ্রাম্যমান আদালতের আওতায় ব্যবস্থা নিতে পারতাম। যেহেতু সেটা হয়নি, ভিডিওটি দেখার পরে আমরা নির্বাচন কমিশন নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।