1. msuzon.du@gmail.com : নিউজ ডেস্ক : নিউজ ডেস্ক
  2. maharaj.cu@gmail.com : Maharaj Hossain : Maharaj Hossain
  3. rajib.du1415@gmail.com : Rajib Ahmed : Rajib Ahmed
  4. support@renexlimited.com : অনলাইন : Renex অনলাইন
নোনা মাটিতে সূর্যমুখীর হলদে আভায় আপ্লুত কৃষক - Dainik Deshbani
রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:০৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ খবর
আইপিএলে না খেলেই বিদায় নিলেন কিউই তারকা বেঙ্গল গ্রুপ চেয়ারম্যানের গ্রেফতার নিয়ে তদবির: প্রশাসনে চাপ ও বিভ্রান্তি, আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ শুল্কের কারণে পোশাক রপ্তানিতে ধাক্কা, অর্ডার স্থগিত করছে মার্কিন ক্রেতারা পেস বোলিং কোচ হিসেবে উমর গুলকে চায় বিসিবি শেখ হাসিনা ফ্যাসিস্ট, আমি নিজেই ৬ বছর চাকরি বঞ্চিত ছিলাম: তুরিন কক্সবাজারে জমি নিয়ে সংঘর্ষ, জামায়াত নেতাসহ নিহত ৩ হজ মৌসুমে কেন ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেয় সৌদি এরদোয়ানের দলে যোগ দিলেন বিশ্বকাপজয়ী তারকা ওজিল এ বছরের মধ্যে নির্বাচন না দিলে আদায় করে নেব: ইশরাক পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ পরীমণির বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ

নোনা মাটিতে সূর্যমুখীর হলদে আভায় আপ্লুত কৃষক

নিজস্ব সংবাদদাতা
  • শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪
দূর থেকে বিলের দিকে তাকালে মনে হবে যেন বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সংগৃহীত ছবি:- দৈনিক দেশবানী
দূর থেকে বিলের দিকে তাকালে মনে হবে যেন বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। সংগৃহীত ছবি:- দৈনিক দেশবানী

‘কয়েক বছর আগেও আমাগের এলাকায় আমন ধান চাষের পর জমিতে কেউ চাষটাষ করত না। শুষ্ক মৌসুমে মাটিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যায়, তাই ভাবতাম চাষাবাদে ফাও খরচ আর পরিশ্রম হবে। তবে দুই বছর ধরে মানুষের ধারণা বদলাই গেছে। এসব নোনা মাটির পতিত জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে কম খরচে অনেক ফলন পাচ্ছি।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে খুলনার কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের পাটোলিয়া গ্রামের কৃষক নির্মল চন্দ্র সরকার নিজ বাড়ির সামনের সড়কে দাঁড়িয়ে আলাপকালে এসব কথা বলেন।

কৃষক নির্মল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কখনো ভাবিনি এই জমিতে আমরা কোনো দিন অন্য ফসল ফলাইতে পারব। খেতের দিকে চলেন দেখাবানে, বিলজুড়ে কেমন সূর্যমুখীর হলদে ফুল ফুটে আছে। সূর্যমুখীর চাষ এখন দিনকে দিন বাড়তেছে।’

সূর্যমুখী ফুল চাষের খেতের দিকে যেতে যেতে নির্মল বলেন, এক বছর আগে কৃষি কর্মকর্তারা তাঁকে দিয়ে বিলের পতিত এক বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করিয়েছিলেন। কম খরচ ও অল্প পরিশ্রমে লাভবান হওয়ায় এর পর থেকে তিন বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেন। গত বছর তিন বিঘা জমিতে ১৮ মন বীজ পেয়েছিলেন। এবার বীজ আরও বেশি হবে মনে হচ্ছে।

১ হাজার ৭০০ জন কৃষক এবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের

সহযোগিতায় নিজ নিজ জমিতে এই ফুলের চাষ করেছেন।

কৃষক নির্মল চন্দ্রের বাড়ির পেছনেই পাটোলিয়ার বিল। দূর থেকে বিলের দিকে তাকিয়ে মনে হয় যেন, বিশাল আকারের হলুদ গালিচা বিছিয়ে রাখা হয়েছে। কাছে গিয়ে চোখে পড়ে হাজারো সূর্যমুখী ফুল ফুটে আছে। সূর্যমুখীর হলুদ আভায় জ্বলজ্বল করছে পুরো মাঠ। ফুলের মন মাতানো ঘ্রাণ ছড়িয়েছে। মৌমাছিরা ছুটছে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে। সূর্য যখন যেদিকে হেলেছে, সূর্যমুখী ফুলও সেদিকে হেলে পড়ছে। ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরাও বেশ উচ্ছ্বসিত ও আপ্লুত।

কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাইমুর রহমান বলেন, পাটোলিয়া গ্রামের প্রতিটি পরিবার এবার সূর্যমুখী চাষ করেছেন। এ এলাকায় আমন ধান উত্তোলন করতে দেরি হওয়ায় সূর্যমুখীও বিলম্বে চাষাবাদ হয়েছে। সূর্যমুখীর এক মণ বীজ থেকে ১৮ থেকে ২০ কেজি তেল উৎপন্ন হয়। বর্তমানে সূর্যমুখী তেলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে এ ফসল উৎপাদনের আগ্রহ বাড়ছে।

কয়রা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২০২১-২২ অর্থবছরে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ২০০ জন কৃষক প্রায় ৪০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে ৬৫০ জন কৃষক ৮৮ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেন। এবার তা আরও বেড়ে ২২০ হেক্টরে দাঁড়িয়েছে। বেড়েছে কৃষকের সংখ্যাও। ১ হাজার ৭০০ জন কৃষক এবার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহযোগিতায় নিজ নিজ জমিতে এই ফুলের চাষ করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরের রোদে কয়রার আমাদী এলাকার বিলে সূর্যমুখী গাছের পরিচর্যা করছিলেন কিষানি মিতা রানী। গাছের অপ্রয়োজনীয় অংশ ছেঁটে ফেলার ফাঁকে তিনি বলেন, এর আগে লবণাক্ততার কারণে শুষ্ক মৌসুমে জমিতে কোনো ফসল হতো না। এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে তিন বিঘা জমিতে সূর্যমুখীর চাষ করেছেন। এতে তেমন পরিশ্রম নেই। আবার বেশি সেচও লাগে না। লবণাক্ততার মধ্যেও গাছে অনেক বড় বড় ফুল হয়েছে। খেত পরিচর্যার কাজটা ভালোভাবে করতে পারলে অনেক লাভবান হওয়া যাবে।

কয়রা সদর ইউনিয়নের তিন নম্বর কয়রার কিষানি তৃষ্ণা ঢালী দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। তাঁর খেতে গিয়ে দেখা গেছে, চারদিকে ফুটে আছে হলুদ সূর্যমুখী ফুল। সবুজের মধ্যে হলুদ ফুলগুলো অপরূপ সুন্দর দেখাচ্ছে। তৃষ্ণা ঢালী বলেন, দুই বিঘা জমিতে চাষাবাদে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকার মতো। আর এক সপ্তাহের মধ্যে খেত থেকে বীজ উত্তোলন করতে পারবেন। আশা করছেন, ৬৫ হাজার টাকার মতো লাভ থাকবে।

কয়রা উপ‌জেলা কৃ‌ষি কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ব‌লেন, ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিনা মূল্যে বীজ ও সার সরবরাহ করায় অনেক কৃষক আগ্রহী হয়েছেন। কয়রায় এ বছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। ১ হাজার ৭০০ জন কৃষক‌কে বিনা মূল্যে ১ কে‌জি ক‌রে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

শেয়ার:
আরও পড়ুন...
স্বত্ব © ২০২৫ দৈনিক দেশবানী
ডিজাইন ও উন্নয়নে - রেনেক্স ল্যাব