যুক্তরাজ্যের এক সংবাদমাধ্যমে অভিযোগ তোলা হয়েছে, রাশিয়ার বিরোধী নেতা আলেক্সেই নাভালনিকে হত্যা করতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গুপ্তচরেরা দুই দফায় বিষ প্রয়োগ করেছিলেন। দ্য টাইমস-এর প্রতিবেদনে জার্মান গুপ্তচরদের গোপন নথির সূত্রে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়া থেকে চিকিৎসার জন্য নাভানলিকে যখন বিমানে করে জার্মানি নেওয়া হচ্ছিল, সে সময় দ্বিতীয়বারের মতো তাকে বিষ প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়। তবে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল।
গত ২০ আগস্ট সাইবেরিয়ার টমস্ক থেকে বিমান করে মস্কো ফিরছিলেন নাভালনি। মাঝ আকাশে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। উপায় না দেখে ওমস্ক শহরে বিমানের জরুরি অবতরণ করিয়ে শুরু হয় চিকিৎসা। এরপর নাভালনির শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকায় জার্মানির বার্লিনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বিষ প্রয়োগের ব্যাপারটি নিশ্চিত করেন। তারপর সুইডেন ও ফ্রান্সের গবেষণাগারও সাফ জানায়, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর বিরোধী নাভালনির ওপর সোভিয়েত জামানার ভয়াবহ নার্ভ এজেন্ট নভিচক প্রয়োগ করা হয়েছিল।
জার্মান গুপ্তচরদের গোপন রিপোর্ট তাদের হাতে এসেছে দাবি করে দ্য টাইমস বলছে, নাভালনি প্রথমবার বিষ প্রয়োগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। জীবন সংকট দেখা দিলেও তিনি বেঁচে যান। তড়িঘড়ি তাকে সাইবেরিয়ার ওমস্ক শহর থেকে চিকিৎসার জন্য জার্মানিতে নিয়ে আসা হয় বিশেষ বিমানে। বিমানে পুতিনের গুপ্তচররা তাকে বিষের দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে ফের মারার চেষ্টা করে। কিন্তু সেটা ইঞ্জেকশন বা স্যালাইনের সঙ্গে তারা দিতে পারেনি। দ্বিতীয় চেষ্টা সফল হলে নাভালনিকে বাঁচানো মুশকিল হত। তবে দ্বিতীয় চেষ্টার প্রমাণ পেয়েছে জার্মান ফরেনসিক টিম।
ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর রাসায়নিক যুদ্ধ ও জৈব যুদ্ধ সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ প্রাক্তন কমান্ডার হামিশ ডি ব্রেটন গর্ডন স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিমানে নার্সরা অসুস্থ নাভালনিকে অ্যাট্রোপিন নামের একটি বিষ প্রতিরোধী ইঞ্জেকশন দেওয়ায় কাজ করেনি শক্তিশালী নার্ভ এজেন্ট। তিনি বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে মারার জন্য দ্বিতীয়বার চেষ্টা হয়েছিল।
নাভালনি ঘনিষ্ঠদের প্রাথমিক ধারণা, টমস্ক বিমানবন্দরে তার চায়ে বিষ মেশানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানান, তার স্নায়ুতন্ত্র ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছিল। কোমায় আচ্ছন্ন হয়েছিলেন তিনি। সেটা বিষের প্রভাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল।