বৃদ্ধ মায়ের ওষুধ, সংসারের বাজার, সন্তানদের লেখাপড়া ও এনজিওর কিস্তির টাকা যোগান দিতে হয় শুধু চা বিক্রি করে। যেন-তেন করে চলছিল তাঁর সংসার। হঠাৎ করেই মহামারী করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শুরু হয় লাগাতার লকডাউন। বন্ধ রাখতে হয় একমাত্র উপার্জনের মাধ্যম চায়ের দোকানটি। যাতে করে বেশ কিছুদিন না খেয়েও পার করতে হয়েছে। বলছিলাম পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মুরাদিয়ার ইউনিয়নের বাসিন্দা দরিদ্র চা দোকানী বাবু লালের কথা।
উপজেলা শহরের নসিব সিনেমা চত্তর এলাকায় টং দোকানে চা বিক্রি করেন বাবু লাল। খুশী মার্কেটের নীচতলায় সাবলেটের একটি অস্থায়ী চা দোকনের ইনকামে বাবু লালের স্ত্রী দুই সন্তানসহ বৃদ্ধ মাকে নিয়ে মোটামুটি চলছিল সংসার। এ দিয়ে সপ্তাহে গুনতে হতো এনজিওর কিস্তির টাকাও। এরিমধ্যে গতবছর করোনা মহামারিতে শুরু হয় লকডাউন। যার কারনে বন্ধ রাখতে হয়েছে চায়ের দোকানটি। ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা থেকে অনেকেই সাহায্য পেয়েছেন কিন্তু বাবু লালের ভাগ্যে এক কেজি চালও জোটেনি! বাবু লালের মতো থানা ব্রিজ এলাকার ছিদ্দিক হাওলাদার, আবদুস ছালাম চৌকিদার, আবুল কাসেম গাজী, রাজাখালী বাসস্ট্যান্ডে হারুন খাসহ অনেকের অবস্থা একই। দোকান বন্ধে ধার-দেনায় তারা জর্জড়িত। এসব দায়-দেনা পরিশোধ করতে হবে চা বিক্রি করে। লকডাউনে খাবার জোটানো আর ঋণের কিস্তি পরিশোধের চিন্তায় তাদের এখন দিশেহারা অবস্থা।
বাবু লাল বলেন, আগামী কাল (১৪ এপ্রিল) থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। মাইনষের ধারের টাকা, বুড়া(বৃদ্ধ) মায়ের ওষুধ, সংসারের বাজার, এনজিওর কিস্তি কেমনে দিমু? মোর সংসার কেমনে চলবে? না খাইয়াই কি মরমু? সরকার যদি আমাগো দিকে একটু তাকায় তাইলে মা, বউ মাইয়াসহ বাইচ্চা(বেঁচে) থাকতে পারব।