বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে তারা অবরোধ শুরু করেন। অবরোধের কারণে শাহবাগ মোড়ের আশপাশের সড়কগুলোতে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের দাবিতে দুই ঘণ্টা অবরোধ শেষে রাজধানীর শাহবাগ ছাড়লেন আন্দোলনরত বিডিআর পরিবারের সদস্যরা। এতে পুনরায় যান চলাচল শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া ৩টায় তারা শাহবাগ ছেড়ে শহীদ মিনারে ফিরে যান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সমন্বয়ক মাহিন সরকার জানান, শাহবাগ থেকে ফিরে গেলেও শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি চলবে। দুই ঘণ্টার মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা না এলে যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির দায় সরকারকে নিতে হবে।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর অন্তত ৬০০-৭০০ সদস্য শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। তারা বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য দেন। যতক্ষণ ইনসাফ প্রতিষ্ঠিত না হয়, ততক্ষণ তারা লড়াই চালিয়ে যাবেন, বলে ঘোষণা দেন।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদ মুনসুর বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের পর যারা চাকরিচ্যুত হয়েছে ও চাকরিচ্যুত সদস্যদের পরিবারের লোকজন দ্বিতীয় দিনের মতো এ আন্দোলন করেছেন। দুপুর থেকে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিল। সেখানে সম্পূর্ণ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে, সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলনে চাকরিচ্যুত বিডিআরের সদস্যরা বলেন, পিলখানা হত্যা মামলার বিচার ব্যবস্থা নিয়ে প্রহসন চলছে। সব মিথ্যা মামলা বাতিল ও কারাবন্দী সদস্যদের মুক্তির দাবি জানান তারা। কেরানীগঞ্জে আদালত বসার কথা থাকলেও, তা না হওয়ায় একে ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছেন তারা।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত উল্লেখ করে অবরোধকারীরা বলেন, দেশবিরোধী চক্রান্তের শিকার হয়েছেন বিডিআর সদস্যরা। কারাবন্দীদের মুক্তিসহ ৩ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।
বিডিআর হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও কারাগারে বন্দিদের মুক্তিসহ সাত দফা দাবি নিয়ে চাকরিচ্যুত সাবেক বাংলাদেশ বর্ডার গার্ডের (বিডিআর) ৯ সদস্য বুধবার (৮ জানুয়ারি) শাহবাগে পদযাত্রা করেছেন। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী তারা প্রথমে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার জড়ো হন। পরে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে পদযাত্রা করেন।
পদযাত্রাটি শাহবাগ থানার সামনে এলে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যস্থতায় একটি প্রতিনিধি দল তাদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত একটি স্মারকলিপি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যান। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্ত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, কারাবন্দিদের মুক্তিসহ সাত দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। বুধবার দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী কমিটির সদস্য মাহিন সরকারের নেতৃত্বে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের ৯ সদস্যের প্রতিনিধি দল যমুনায় গিয়ে এ স্মারকলিপি দেন।
বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাদের দাবি পূরণ না হলে ‘শাহবাগ ব্লকেড’সহ লাগাতার কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিডিআর জওয়ানরা। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের অন্যান্য দাবি হলো– রিমান্ডে বিডিআর সদস্যদের মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের মাধ্যমে বিচারসহ মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর সদস্যদের দাবি অন্তর্ভুক্ত ও ২৫ ফেব্রুয়ারিকে সেনা হত্যা দিবস ঘোষণা।