আলোচনা চলছিলই। এ বার তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারির পরিকল্পনা আরো জোরদার হলো। আগামী ১০ ডিসেম্বর ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউরোপের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
গত অগাস্ট মাস থেকে গ্রিস এবং তুরস্কের মধ্যে বিতর্ক চলছে। ভূমধ্যসাগরের একটি অংশে খনিজ তেলের সন্ধান মিলেছে। কী ভাবে সেই উত্তোলন করা সম্ভব তা দেখার জন্য সেখানে জাহাজ পাঠিয়েছে তুরস্ক। কিন্তু গ্রিসের দাবি ওই এলাকা তাদের। ফলে দ্রুত তুরস্ককে জাহাজ সরিয়ে নিতে বলে তারা। গত চার মাসে তুরস্ক একবারই কেবল ভূমধ্যসাগরের ওই এলাকা থেকে জাহাজ সরিয়েছিল। কিন্তু তারপর আবার তারা সেখানে জাহাজ পাঠায়। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এর্দোয়ান জানিয়ে দেন, তেল উত্তোলনের পরীক্ষা জারি থাকবে। কারো নিষেধ তুরস্ক মানবে না, কারণ ওই এলাকা গ্রিসের নয়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন দীর্ঘদিন ধরেই এই বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছে। গ্রিসের পাশাপাশি তারাও তুরস্ককে জাহাজ সরিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু তুরস্ক তাতে কান দেয়নি। ইইউ চেষ্টা করেছিল গ্রিস, তুরস্ক এবং সাইপ্রাসকে একসঙ্গে বসিয়ে বৈঠক করার। কিন্তু তাও সফল হয়নি। এই পরিস্থিতিতেই সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়, সেখানে তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।
জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলেন, তুরস্ক যে আচরণ করছে, তাতে তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা না চাপিয়ে আর কোনো উপায় নেই। আগামী ১০ তারিখ ফের বৈঠকে বসবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হতে পারে। ফ্রান্সও চাইছে ইইউ তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করুক। সম্প্রতি ফ্রান্সে শিক্ষক হত্যাকে কেন্দ্র করে তুরস্ক এবং ফ্রান্সের মধ্যে বিতর্ক হয়েছে। তখন থেকেই ফ্রান্স চাইছে, তুরস্কের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হোক।
নিষেধাজ্ঞা চাপলে তুরস্কের সঙ্গে অস্ত্রের ব্যবসা বন্ধ হতে পারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের। তেল এবং খনিজের উপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপানো হতে পারে।
এর্দোয়ান অবশ্য সোমবারেই বলেছেন গ্রিসের সঙ্গে বৈঠকে বসতে তিনি রাজি। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিষয়টিকে অন্ধের মতো দেখছে বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, বিতর্কটি নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে আচরণ করছে, তা আশাব্যঞ্জক নয়।
এসজি/জিএইচ (রয়টার্স, এপি)