জেনি মোলেন্ডিক ডিভলিলি কানাডায় জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। জীবনের নানা সময় প্রতিবন্ধী মানুষের সঙ্গে কাটানোর সুযোগ মেলে তাঁর। সেখান থেকেই বধির শিক্ষা ও ইশারা ভাষার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয়। অতঃপর রেড রিভার কলেজ ও কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ (এএসএল) অনুবাদ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ইংরেজি ভাষা বিষয়ে ডিগ্রি গ্রহণ করেন।
ভাষাতত্ত্ব ও সাংকেতিক ভাষা নিয়ে গবেষণার কাজ করার সময় ইসলামের সঙ্গে পরিচয় হয় মোলেন্ডিকের। এরপর ইসলাম সম্পর্কে দীর্ঘ পড়াশোনার পর ২০০৬ সালে মোলেন্ডিক ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম ও মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ ও শিক্ষা তরুণদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন তিনি।
মোলেন্ডিক কানাডার একটি খ্রিস্টান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভাষাতত্ত্বে স্নাতককালে ও আমেরিকান সাংকেতিক ভাষার অনুবাদের সময় তিনি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন। জীবনের বিভিন্ন বিষয়ে উদ্রেক হওয়া প্রশ্নের জবাব খুঁজতে তিনি মুসলিমদের সঙ্গে নানা বিষয়ে বিতর্ক শুরু করেন।
মোলেন্ডিক বলেন, ‘আমি মুসলিমদের সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। তাদের বিশ্বাস সম্পর্কে আমার কোনো ধারণ ছিল না। আমার জানা ছিল না যে আমরা একজন অভিন্ন নবীর প্রতি বিশ্বাস করি। ইসলাম নিয়ে আমি পড়াশোনা শুরু করি। সপ্তাহে একদিন আমাকে মসজিদে সাংকেতিক বা ইশারা ভাষা অনুবাদের কাজ করতে হতো। তখন থেকে আমি ইসলাম সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করি।’
‘দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর আমার সব প্রশ্নের জবাব ইসলামে পেয়েছি। অবশেষে ২০০৬ সালের ১৪ মে আমি ইসলাম গ্রহণ করি। তা ছিল আমার জীবনের সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত। আমার জন্য নতুন এক জগৎ উম্মুক্ত হয় এবং নতুন জীবন শুরু করি। আমি উপলব্ধি করি যে ইসলামই সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা।’
প্রথম দিকে মোলেন্ডিকের বাবা তাঁর ইসলাম গ্রহণের বিরোধিতা করেন এবং তাঁর সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহ্বান করেন। কিন্তু মোলেন্ডিক নিজের সিদ্ধান্তে অবিচল থাকেন। ২০১২ সালে তুরস্কের সামি ডিভলিলির সঙ্গে তাঁর দেখা হয়। এরপর তাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের প্রথম দিন থেকে তিনি হিজাব পরিধান শুরু করেন।
ইসলাম নিয়ে পড়তে গিয়ে মোলেন্ডিকের মনে হয়েছে, তাঁর নিজস্ব জীবনাচার ও সংস্কৃতি পুরোপুরি ত্যাগ করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় পড়েন তিনি। কিন্তু একজন মুসলিম ব্যক্তিত্বের একটি আলোচনা শুনে তাঁর ভীতি কেটে যায়।
তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ইসলাম পরিচিতিকে জাগিয়ে তুলতে কাজ করছেন মোলেন্ডিক। এ জন্য তিনি একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ।