পুষ্টির অন্যতম উৎস হলো ডিম। আমরা সবাই কম বেশি ডিম খেয়ে থাকি। কেউ ডিমের সাদা অংশ খেয়ে থাকেন কেউ আবার ডিমের কুসুম খেয়ে থাকেন। তবে, আপনি কী জানেন ডিমের সাদা অংশে থাকে প্রোটিন আর কুসুমে থাকে কোলেস্টেরল, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ও ভিটামিন বি।
অনেক সময় ডায়েটে শুধু ডিমের সাদা অংশ খেতে বলা হয়। আবরও হার্ট ভালো রাখতে ডিমের কুসুম খেতে বারণ করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, একজন সুস্থ ব্যক্তি দিনে কুসুমসহ একটি পুরো ডিম খেতে পারেন। রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা সামান্য বেশি থাকলেও প্রতিদিন একটা ডিম খাওয়া যাবে। এতে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়বে। কমবে বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি।
তাহলে স্বাস্থ্যর জন্য কোনটি উপকারী? চলুন জেনে নেওয়া যাক
ক্যালরি
ক্যালরির দিক থেকে ডিমের সাদা অংশে ও কুসুমে বেশ পাথর্ক্য রয়েছে। ডিমের সাদা অংশে থাকে ১৭ ক্যালরি, যেখানে কুসুমে থাকে ৫৫ ক্যালরি।
আমিষ
প্রোটিনের দিক থেকে বিবেচনা করলে, ডিমের সাদা অংশে প্রোটিনের পরিমান বেশি থাকে। উচ্চতর প্রোটিন থাকায় একে পাওয়ার হাউস বলা হয়, যা ওজন কমাতে, মাথা ঘোরা কমাতে সাহায্য করে।
চর্বি
ডিমের সাদা অংশে ফ্যাটের অস্তিত্ব না থাকলেও কুসুম প্রচুর পরিমানে ফ্যাট থাকে। যাকে ওমেগা–থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড বলে। একই সঙ্গে কুসুমে রয়েছে কোলিন। যা কোষ আবরণ গঠনে সাহায্য করে। হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমায়, স্নায়বিক রোগ ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
কোলেস্টেরল
কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক ও হার্টকে সুস্থ রাখতে অনেকেই কুসুম বাদ দেন। তবে মজার ব্যাপার হলো টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরিতে কোলেস্টেরল প্রয়োজন পড়ে, যা শরীরে শক্তি বৃদ্ধি এবং পেশি গঠনে সাহায্য করে। পিত্তে উপস্থিত অ্যাসিড তৈরিও কোলেস্টেরলের অন্যতম কাজ। এদিকে, খাবারে কোলেস্টেরল না পেলে লিভার নিজেই তৈরি করে নেয়।
ভিটামিন
ডিমের কুসুমে ভিটামিন বি৬, বি১২, এ, ডি, ই, থাকে। ডিমের কুসুমের ভিটামিন ‘এ’ ক্যারোটিনয়েড হিসেবে থেকে দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। অপর দিকে সাদা অংশেও বিভিন্ন বি ভিটামিন রয়েছে এবং উন্নত মানের প্রচুর প্রোটিন থাকে।
খনিজ পদার্থ
ডিমে ৯৩ শতাংশ আয়রনই রয়েছে কুসুমে। আর ৭ শতাংশ আয়রন রয়েছে সাদা অংশে। অন্যদিকে, ৯০ শতাংশ ক্যালসিয়াম রয়েছে কুসুমে, যা দাঁত ও হাড়ের জন্য উপকারী। এদিকে, সাদা অংশে রয়েছে পটাশিয়াম, যা হার্টের যেকোনো সমস্যা থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণ রাখে। ডিমের সাদা অংশে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম ও ম্যাঙ্গানিজসমৃদ্ধ উপাদান, যা শরীরের ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
তবে যারা কোলেস্টেরল বা অন্য কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন তারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কুসুম খেতে পারেন। স্বাস্থ্যসচেতন মানুষরা মূলত ডিমের সাদা অংশ নিয়ে থাকেন। তবে ডিম সব সময় পোচ বা সেদ্ধ করে খেতে চেষ্টা করবেন। এতে বেশি উপকার মিলবে।