দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর দেওয়ার কথা বলে মোটা অঙ্কের অর্থ গ্রহণ করেও ঘর না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঘোড়াঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে
গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার কানাগাড়ী বাজার এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন মন্ডলের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন সাইদুর রহমান টুনু নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা। টুনু ঘোড়াঘাট পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করে বলেন, ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর বিতরণ কার্যক্রমের জরিপ চলাকালীন ঘর পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আমার কাছে থেকে ২৫ হাজার টাকা নেয়। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি আমাকে ঘর পাইয়ে দিতে না পারায়, আমি টাকা ফেরত চাইলে সে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি প্রদান করছে।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, সম্প্রতি ওই ছাত্রলীগের নেতার ঘর দেওয়ার বিনিময়ে টাকা নেওয়ার অভিযোগ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ বরাবর আমি একটি অভিযোগ দিয়েছে। এই কারণে শাহিন মন্ডল গত ৩দিন আগে ২০ থেকে ২৫ জন ছেলে নিয়ে আমার বাড়ির সামনে গিয়ে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি প্রদান করে এসেছে। বর্তমানে আমি আমার জীবন নিয়ে শঙ্কায় আছি।
এছাড়াও ঘোড়াঘাট ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারির বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে বিস্তর অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা আরো অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ঘর দেওয়ার নাম করে। কিন্তু ভুক্তভুগিরা ভয়ে কোন অভিযোগ করছেনা। সাংগঠনিক কার্যক্রম না চালিয়ে তারা সবসময় জমি দখল, টেন্ডার বাণিজ্য, হাট ইজারা, সরকারি পুকুর ডাকসহ নানান ধরণের তদবির বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাদের এই সব অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এবং সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক এমপিও ক্ষুব্ধ। এই বিষয়ে দিনাজপুর ঘোড়াঘাটের সন্তান বাংলাদেশ ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ চৌধুরীকে ফোন করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই কমিটি গঠনের শুরু থেকেই রয়েছে নানান বিতর্ক। কমিটি করার সময় ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র মানা হয়নি।দিনাজপুর জেলা ছাত্রলীগ ত্যাগী ও যোগ্যদের বঞ্চিত করে অনৈতিক সুযোগ সুবিধার বিনিময়ে রাতের আধাঁরে বিতর্কিত ছেলেদের দিয়ে এই কমিটি করেছিল। আর এই বিতর্কিত অনুপ্রবেশকারীরাই আজ ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করছে।আপনি যে প্রশ্ন গুলি করেছেন এসব বিষয়ে বিভিন্ন অভিযোগ এবং প্রমাণ পত্র আমার হাতে এসেছে। যারা সামান্য টাকার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্পে সাধারণ মানুষজনকে ঘর পেয়ে দিবে বলে টাকা নিতে পারে তারা ছাত্রলীগ করার নৈতিকতা হারিয়েছে। এসব বিষয়ে আমি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সেক্রেটারিকে খুব শীঘ্রই অবগত করবো। আশাকরি তারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন তা অবশ্যই ছাত্রলীগের জন্য ভালো হবে। ছাত্রলীগের ভাবমূর্তি নষ্টকারীদের কোন ছাড় নাই। এরা সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্পে দুর্নীতির সাথে জড়িত ঘোড়াঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।”
এসব অভিযোগের বিষয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন মণ্ডলকে বারবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি।
একই সময় সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হক মন্ডল নামের অপর আরেকজন ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতা শাহিন মন্ডল আরো বেশ কয়েকজন ছেলেকে নিয়ে অবৈধ ভাবে আমার জায়গার উপরে থাকা প্রায় দুই লক্ষ টাকা মূল্যের ইউক্যালিপটাস গাছ কেটে নিয়ে গেছে। এই বিষয়ে ভূক্তভোগী ওই ব্যক্তি ঘোড়াঘাট থানায় একটি অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন।