ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে নিজের অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতীর জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদন শুনানিতে আজ বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেন আদালত। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগে ওই শুনানি হয়। শুনানি নিয়ে আদালত ১ জুন পরবর্তী দিন রেখেছেন।
শুনানিকালে আদালত বলেন, নথি অনুসারে, তাঁর (মাহবুবুল হক চিশতী) পরিবারের সবাই অপরাধ সম্পর্কিত কার্যক্রমে জড়িত। মাহবুবুল হক চিশতী তিনি মূল ডিলার (বণ্টনকারী বা কারবারি) এবং তিনি তাঁর পরিবারের সব সদস্যকে তাঁর অপরাধ সম্পর্কিত কার্যক্রমে ব্যবহার করেছেন। রাশেদুলের আইনজীবীর উদ্দেশে আদালত বলেন, ৫৫ লাখ টাকার কথা বলছেন—এটি অংশবিশেষ। পুরো চিত্র হচ্ছে পুরো পরিবার টোটালিটি অপরাধমূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত। একপর্যায়ে রাশেদুল চিশতীর আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ বলেন, ‘টোটালিটির মধ্যে আমার (রাশেদুল) বিরুদ্ধে সরাসরি একটি শব্দও নেই।’
দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও রাশেদুল হক চিশতীর পক্ষে আইনজীবী শাহরিয়ার কবির শুনানিতে ছিলেন।
আইনজীবীর সূত্রের তথ্যমতে, ওই মামলায় গত বছরের ১৯ মে বিচারিক আদালত থেকে জামিন পান রাশেদ চিশতী। এর বিরুদ্ধে দুদক হাইকোর্টে আবেদন করলে রুল হয়। জামিন আদেশ কেন বাতিল হবে না তা রুলে জানতে চাওয়া হয়। এই রুল খারিজ করে গত ২৬ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। ফলে রাশেদ চিশতীর জামিন বহাল থাকে।
এর বিরুদ্ধে দুদক আবেদন করে, যা ১ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত রাশেদুল হক চিশতীর জামিন বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায় চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে এই সময়ের মধ্যে দুদককে নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় দুদক লিভ টু আপিল করে। রাশেদুল হক চিশতীও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনগুলো আজ কার্যতালিকায় ওঠে।
ফারমার্স ব্যাংকে জালিয়াতির ঘটনায় ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী, তাঁর স্ত্রী রুজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল গুলশান থানায় এই মামলা করে দুদক।