সাড়ে তিন বছর পলাতক থাকার পর ফতুল্লার চাঞ্চল্যকর জোড়া খুন মামলার অন্যতম পলাতক আসামী শহীদ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মুন্সিগঞ্জ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল কোড়েরপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
২০১৭ সালে ফতুল্লার কাশীপুর এলাকায় একটি রিকশা গ্যারেজে ঢুকে স্থানীয় সমবায় সমিতির পরিচালক তুহিন হাওলাদার মিল্টন (৩৮) ও ম্যানেজার পারভেজ আহমেদকে (৩০) নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় তারা ঘটনার আলামত নষ্ট করতে লাশসহ রিকশা গ্যারেজে আগুন ধরিয়ে দেয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন(পিবিআই) নারায়ণগঞ্জ এর উপ পরিদর্শক (এস আই) শাকিল আহমেদ জানান, মামলাটি প্রথমে ফতুল্লা থানা পুলিশ তদন্ত করছিল। পরবর্তীতে মামলাটি পিবিআই নারায়ণগঞ্জ তদন্ত করছে।
তিনি জানান, মূলত আধিপত্য বিস্তার ও স্থানীয় একটি সমবায় সমিতির পাওনা টাকা নিয়েই ওই সমিতির মালিক মিল্টন ও ম্যানেজার পারভেজকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। মামলার এজাহারে থাকা আসামী মাহাবুব পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি ও পরোক্ষভাবে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম জানায়।
জবানবন্দিতে হত্যায় সরাসরি অংশ নেওয়া আসামী শহীদ হোসেনের নামও ছিল। কিন্তু ঘটনার পর থেকে শহীদ আত্মগোপনে চলে যান।
তদন্ত কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শহীদকে আমরা গ্রেফতার করি। তার বাড়ী শহরের বাবু রাইল এলাকায়। গ্রেফতারকৃত শহীদকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শনিবার আদালতে প্রেরণ করা হবে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নিহত মিল্টনের ফতুল্লার কাশীপুর এলাকার হোসাইনীনগর এলাকায় ‘ছায়াবৃত্ত শ্রমজীবি সমবায় সমিতি’ নামে একটি সংগঠন ছিল। ওই সমিতির কাছে পাওনা ১৭ লাখ টাকা নিয়েই বাবুরাইল এলাকার রায়হান, দুলাল ও রাকিবের সঙ্গে নিহত মিল্টনের বিরোধ ছিল। তারা সবাই শহরের দক্ষিণের ত্রাস হিসেবে পরিচিত বিএনপি নেতা হাসান আহমেদের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর ঘটনার দিন হাসান বাহিনীর ২৫-৩০ জন সন্ত্রাসী কাশীপুর এলাকায় মিল্টন ও তার ম্যানেজার পারভেজের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা একটি রিকশা গ্যারেজের ভেতর কুপিয়ে দুইজনকে হত্যা করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেয়।