দেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য থাকা ঘোড়ার পর্যাপ্ত খাদ্য ও আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসককে মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলকে এই মৌখিক আদেশের তথ্য জেলা প্রশাসক অবহিত করতে বলা হয়েছে।
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা), ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) এবং পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের করা রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এ রিট আবেতনের ওপর শুনানি গ্রহণ করা হবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।
গত ২৯ জুন দেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজারে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য থাকা ঘোড়া রক্ষায় আদালতের নির্দেশনা চেয়ে ওই তিনটি সংগঠন রিট আবেদন করে। গতকাল রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা হাসান। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ কবীর। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
গতকাল শুনানিতে অ্যাডভোকেট রেজওয়ানা হাসান আদালতকে জানান, এরইমধ্যে ৪৬টি ঘোড়া মারা গেছে। এখন ৫৬টি ঘোড়া জীবীত আছে। পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশের পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ওই ঘোড়াগুলোর একমাসের খাবারের ব্যবস্থা করে। যা আজ (৩০ জুন) শেষ হয়ে যাবে। এ বক্তব্য শোনার পর আদালত আদেশ দেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিলের সভাপতি, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ও কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কক্সবাজার। এই নগরী তার অপরূপ সৌন্দর্যের জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিন লক্ষাধিক পর্যটক এ নগরীতে ভীড় জমায়। দেশ-বিদেশ থেকে আগত এসব পর্যটক বিনোদনের অংশ হিসেবে ঘোড়ায় চড়েন। সেখানে দুই শতাধিক ঘোড়া বিনোদনে ব্যবহার করা হয়। বৈশ্বিক মহামারির কারণে পর্যটকের সংখ্যা কমে যাওয়ায় কক্সবাজারের ঘোড়াগুলো খাদ্যের অভাবে মারা যাচ্ছে। অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এনিয়ে সম্প্রতি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় দফা
লকডাউনে খাদ্যের অভাবে এরইমধ্যে ২১টি ঘোড়ার মৃত্যু ঘটেছে। আর গতবছর প্রথম দফায় লকডাউনের সময় খাদ্য সংকটে ৪০টির বেশি ঘোড়ার মৃত্যু হয়েছে। ঘোড়ার খাদ্য জোগান না দিতে না পেরে ঘোড়ার মালিক ও তত্ত্বাবধায়করা ঘোড়াগুলোকে রাস্তায় ছেড়ে দিচ্ছেন। ফলে রাস্তায় পলিথিনসহ বিভিন্ন বর্জ্য খেয়ে ঘোড়াগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মারা যাচ্ছে।