ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকম লিমিটেডের পাওনাদার গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আজ বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে লেখা এই চিঠিতে ক্রেতাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
টাকা নিয়ে পণ্য দেওয়া হয়নি, আবার টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি—এমন ৬ হাজার ৭২১টি লেনদেনের একটি তালিকা গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে কিউকম ও তাদের পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান ফস্টার করপোরেশন। লেনদেনগুলোর বিপরীতে ৫৯ কোটি ৫ লাখ টাকা জড়িত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ‘ফস্টার পেমেন্ট গেটওয়ের কাছে আটকে থাকা কিউকমের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জরুরি সভা’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালিকাটি তৈরি করা হয়। ওই বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ ব্যাংক, কিউকম ও ফস্টারের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক আবেদনে কিউকম ও ফস্টার বলেছে, যেসব ক্রয়াদেশের বিপরীতে কিউকম গ্রাহকদের পণ্য সরবরাহ করেনি, অথচ গ্রাহকের পরিশোধিত টাকা ফস্টারের কাছে আটকে আছে, তার বিপরীতে আংশিক তালিকা দেওয়া হয়েছে এই দফায়। সময় পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে আবার তালিকা তৈরি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পূর্ণাঙ্গ তালিকা পাঠাতে তাদের নতুন করে সময় দিয়েছে আগামী রোববার পর্যন্ত।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, যেসব গ্রাহক নিজেদের হিসাব থেকে ক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা নিজ নিজ হিসাবেই টাকা পেয়ে যাবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ঝামেলা নেই। তবে যাঁরা এজেন্টের মাধ্যমে ক্রয়াদেশ দিয়েছিলেন, তাঁদের পাওনা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটা উপায় বের করতে হবে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যাত্রা শুরু করে কিউকমডটকম। ইভ্যালির মতো তারাও বিশাল ছাড়ে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে পণ্য বিক্রি করে আসছিল। কিউকম ‘বিজয় আওয়ার’, ‘স্বাধীনতা আওয়ার’, ‘বিগ বিলিয়ন’ নামে বিভিন্ন অফারের মাধ্যমে কম দামে মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দিত। অগ্রিম টাকা নিয়ে ২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহককে পণ্য বুঝিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়ে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।
কিউকমের দাবি অনুযায়ী, তাদের নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ৬ লাখের বেশি। ফস্টার আটকে রাখায় গ্রাহকদের ৪২০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে পারছে না বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে অভিযোগ করেছিল প্রতিষ্ঠানটি।
ফস্টারের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, তারা বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া, মিয়ানমার ও সিঙ্গাপুরেও ২৪ ঘণ্টা সেবা দেয়। তাদের বাংলাদেশ কার্যালয় রাজধানীর গুলশানের উদয় টাওয়ারে।