বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার রশ্মি উদ্ভাবন করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টের একটি গবেষণাকেন্দ্রে লেজার রশ্মিটির সফল পরীক্ষা চালানো হয়েছে। শক্তিশালী এই লেজার রশ্মির মাধ্যমে চোখের সার্জারি থেকে শুরু করে মহাকাশের নানা বিষয়ে বৈপ্লবিক অগ্রগতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এই লেজার রশ্মি চার্পড পালস অ্যামপ্লিফিকেশন (সিপিএ) প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করেছেন ২০১৮ সালে পদার্থে নোবেলজয়ী ফ্রান্সের বিজ্ঞানী জেরার্ড মুরো ও কানাডার ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড।
২০০০ সালের দিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইএলআই প্রকল্পের অংশ হিসেবে এই লেজার রশ্মি উদ্ভাবন করা হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার রশ্মি উদ্ভাবনের পর বিজ্ঞানী মুরো বলেন, আমরা একটি ছোট বীজ থেকে শুরু করেছিলাম। বিন্দু পরিমাণ শক্তি থেকে সেই শক্তি এখন লাখ গুণ বেড়েছে। বর্তমানে শক্তিশালী এই লেজার রশ্মির মাধ্যমে পারমাণবিক বর্জ্যের তেজস্ক্রিয়তার সময় কমাতে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এ ছাড়াও মহাকাশে জমে থাকা বর্জ্য ধ্বংসের কৌশল নিয়েও কাজ চলছে।
জানা গেছে, শক্তিশালী এই লেজার রশ্মিতে এক ফেমটোসেকেন্ডে ১০ পেটাওয়াট শক্তিমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম লেজার রশ্মি রয়েছে। ১০ সংখ্যার পর ১৫টি শূন্য বসলে ১০ পেটাওয়াট শক্তি মেলে। আর ১ ফেমটোসেকেন্ড মানে ১ সেকেন্ডের ১০০ কোটি ভাগের ১০ লাখ ভাগ। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এই লেজার রশ্মি পরিচালনা করছে ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান থ্যালেস। প্রতিষ্ঠানটির লেজার সলিউশনের ব্যবস্থাপক ফ্রাঙ্ক লেইব্রেইচ বলেন, অসাধারণ মাত্রায় শক্তি পেতে ৪৫০ টন ওজনের যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। এই গবেষণাকেন্দ্রে হাই-টেক ভবনের জন্য ৩৫ কোটি মার্কিন ডলার অর্থায়ন করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা সব সময় শক্তিশালী লেজার তৈরি করার জন্য আগ্রহী। ১৯৮০-এর দশকে লেজার রশ্মির মাধ্যমে দেয়াল ধ্বংস করা যেত না। শক্তির মাত্রা বাড়াতে বিজ্ঞানী মুরো ও গবেষক স্ট্রিকল্যান্ড চার্পড পালস অ্যামপ্লিফিকেশন নামের একটি কৌশল উদ্ভাবন করেছিলেন। এই কৌশলে লেজারের আলোর তীব্রতা নিরাপদ থাকে, কিন্তু শক্তি বৃদ্ধি হয় অনেক গুণ বেশি। এই কৌশল কাজে লাগিয়েই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার রশ্মি তৈরি করা হয়েছে।