হু হু করে বাড়ছে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যু। আর এই ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সারাদেশে ৮ দিনের ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয়েছে। লকডাউনের প্রথম দিনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি সড়কে চলাচল করতে দেয়া হচ্ছে না কোনও যানবাহন। লকডাউনের বিধি নিষেধ মানাতে এবার কঠোর অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়ছেন নিম্ন শ্রেণীর মানুষ। তাদেরকে জরুরি প্রয়োজনে বের হয়েও বারবার পুলিশের জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে। তাদের কেউ কেউ হাসপাতালের দিকে যেতে গিয়েও মোড়ে মোড়ে পুলিশের চেকপোস্টে আটকে যাচ্ছেন। এমনই একটি ঘটনার ভুক্তভোগী দিনমজুর রফিকুল ইসলাম দম্পতি।
রফিকুল তার স্ত্রী শাহিদা বেগমকে নিয়ে শাহবাগ দিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। তারা জানালেন, তাদের বাসা মোহাম্মদপুর এলাকায়। জরুরি প্রয়োজনে সড়কে নেমে বিপাকে পড়েছেন তারা। কারণ তাদের কাছে মুভমেন্ট পাস নেই। তারা মূলত জানেনই না- কিভাবে মুভমেন্ট পাস নিতে হয়! সরেজমিনে তাদের মতো ভুক্তভোগী আরও অনেককেই পাওয়া যায়। যারা সমাজের নিম্ন শ্রেণীর, তাদেরকে পুলিশের জেরা ও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে।
আজ বুধবার (১৪ এপ্রিল) সরেজমিনে রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি, খামার বাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ এলাকাসহ অন্যান্য স্থান ঘুরে লকডাউনের বিভিন্ন চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে শফিকুল ইসলাম নামের আরও এক ব্যক্তি বলেন, আমি জরুরি একটা কাজে পল্টনে যাব। তবে সড়কে কোন যানবাহন পাচ্ছি না। এমন অবস্থায় হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছি না। মোড়ে মোড়ে সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। আজই পুলিশ-র্যাবকে কড়া পাহাড়ায় দেখা যাচ্ছে।
ধানমন্ডি-হাজারীবাগ জোনে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের সিনিয়র সহকারি কমিশনার (এসি-পেট্রোল) আজিজুল হক বলেন, ভয়ঙ্করভাবে করোনাভাইরাস বৃদ্ধি পেতে থাকায় সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। পরিস্থিতিতে আমাদের কঠোরভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা মোতাবেক আমরা শক্তভাবেই দায়িত্ব পালন করছি। নিয়ম ভঙ্গকারী কাউকেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। এই লকডাউনে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হলেই তাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি কারো কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছি। রাস্তাও আজকে ফাঁকা, রাস্তায় চলাচল করতে মুভমেন্ট পাস অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ঠেকাতে সরকারের জারি করা ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ দিয়ে আজ থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে। এই লকডাউনের জন্য ১৪-২১ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচলের সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা থাকবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাজধানীর রাস্তায় কাউকে বাইরে বের হতে দেখা যায়নি।