নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার ৪০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত। আর এই ভাইরাসের কোনো টিকা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। বিশ্ব করোনাভাইরাস মোকাবিলার দিকে জোর দেওয়ার মধ্যেই বিজ্ঞানীরা কঠোরভাবে চেষ্টা করছেন, যেন পরবর্তী সময়ে নিপা ভাইরাস মহামারী ডেকে না নিয়ে আসে।
এদিকে গত বছরের জানুয়ারিতেই সবাই জেনে গিয়েছিল, চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে এক ধরনের ভাইরাস ছড়িয়ে যাচ্ছে, যে ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মানুষের শ্বাসকষ্টসহ নানা ধরনের সমস্যা হচ্ছে। পরে ১১ জানুয়ারি সেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
এরই মধ্যে চীনের বহু পর্যটক থাইল্যান্ড ভ্রমণে গিয়েছিল। উহান থেকে যাওয়া পর্যটকদের বিমানবন্দর থেকে শুরু করে আরো কিছু জায়গায় নজরে রাখে থাই সরকার।
এদিকে থাইল্যান্ডের রেড ক্রস ইমার্জিং ইনফেকটিয়াস ডিজিস-হেলথ সায়েন্স সেন্টারের প্রধান সুপাপর্ন ওয়াছারাপ্লুসাডে প্রাণী থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটা নানা ধরনের ভাইরাস নিয়ে কাজ করেন। করোনাভাইরাস ছড়ানোর ব্যাপারে বিশেষ করে বাদুড়ের দিকে নজর ছিল তার।
তিনি ও তার দল গত বছরের জানুয়ারির শুরুতেই বলেছেন, করোনাভাইরাস বাদুড় থেকে মানুষের শরীরে এসেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে আক্রান্তদের কোয়ারেন্টিন করাসহ অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হয়েছে।
এসব কারণে সাত কোটি জনসংখ্যার দেশ থাইল্যান্ডে গত ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ৮৯৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং মারা গেছে মাত্র ৬৫ জন।
অথচ, সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছে ৯ কোটি ১৩ লাখ ১৫ হাজারের বেশি মানুষ এবং মারা গেছে ১৯ লাখ ৫২ সহস্রাধিক।
এরই মধ্যে সুপাপর্ন ওয়াছারাপ্লুসাডে মনে করছেন, বিশ্ব অন্য মহামারির শঙ্কায় রয়েছে। বিশেষ করে এশিয়ায় সেই শঙ্কা বেশি।
কারণ, এশিয়ায় সংক্রামক রোগের সংখ্যা অনেক বেশি। এই অঞ্চলে জীববৈচিত্র্যের সমৃদ্ধ বিন্যাস রয়েছে। তার মানে আমরা রোগজীবাণুর মাঝেই বসবাস করছি। যে কোনো সময় নতুন ভাইরাস উদ্ভূত হওয়ার শঙ্কা এখানে বেশি।
এই অঞ্চলে মানুষের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বন্য প্রাণীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা বেশি হওয়ার কারণেও ঝুঁকি বেশি।
নিজের জীবনে সঙ্গীদের নিয়ে বাদুড়ের ওপর গবেষণা করে নানা ধরনের ভাইরাস খুঁজে পেয়েছেন সুপাপর্ন ওয়াছারাপ্লুসাডে। বাদুড়ে থাকা এসব করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে বাসা বেঁধে মহামারি বাঁদিয়ে দিতে পারে!
সূত্র: বিবিসি