ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়েছিল ঠিক এক বছর আগে ২০২০ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি।
আর সেই দাঙ্গার বর্ষপূর্তিতেও অর্ধেকের বেশি মামলার তদন্ত এখনও শেষ হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। খবর বিবিসির।
গত বছরের ফেব্রুয়ারির ওই দাঙ্গায় অন্তত ৪০ মুসলিম ও ১৩ হিন্দু নিহত হয়েছিলেন। নিহতদের মধ্যে মুসলিমই বেশি ছিলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যেও মুসলিমের সংখ্যাই বেশি।
দাঙ্গাপীড়িতদের অনেকেই এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফেরার চেষ্টায় হিমশিম খাচ্ছেন।
এদিকে দিল্লির যে বিতর্কিত বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রর প্ররোচণামূলক বক্তৃতা দাঙ্গায় উসকানি দিয়েছিল বলে ধারণা করা হয়, তাকে চার্জশিটে অভিযুক্ত হননি।
আন্তর্জাতিক একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিশ্র বরং দাবি করেছেন– নিজের কোনো কাজের জন্যই তিনি অনুতপ্ত নন।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কেন্দ্র করে রাজধানী দিল্লির নানা প্রান্তে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়েই ছিল; কিন্তু ২৩ তারিখ থেকেই শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে তা পুরোদস্তুর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ নেয়।
তদানীন্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিল্লিতে পা রাখার কথা তার দুদিন পরই।
ওদিকে জাফরাবাদ, মুস্তাফাবাদ, ব্রিজপুরীসহ বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য বাড়িঘর, দোকানপাট ও মসজিদ-মন্দির জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, যেখানে নিহতদের প্রায় তিন-চতুর্থাংশই ছিলেন মুসলিম।
প্রায় টানা পাঁচ দিন ধরে চলে এই সহিংসতা, আর দিল্লির বিস্তীর্ণ একটা অংশ কার্যত মৃত্যুপুরীর চেহারা নেয়।
দাঙ্গার অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে আটক করা হয়েছে অ্যাক্টিভিস্ট শার্জিল ইমামকে। সেই দাঙ্গার প্রায় এক বছর পর দিল্লি পুলিশ কিন্তু অর্ধেকেরও বেশি মামলার তদন্তই শেষ করতে পারেনি।
দিল্লিতে দ্য প্রিন্টের সাংবাদিক অনন্যা ভরদ্বাজ দিল্লি দাঙ্গার মামলাগুলো ফলো করছেন প্রথম থেকেই। তিনি জানাচ্ছেন দিল্লির দাঙ্গায় এ পর্যন্ত এক হাজার ৮৮১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ শতাংশ বা ৬৫০ জন জামিন পেয়েছেন।
যারা গ্রেফতার হয়েছেন, তার মধ্যে ৯৫৬ মুসলিম আর ৮৬৮ হিন্দু; অর্থাৎ মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। দাঙ্গার ঘটনায় মোট মামলা হয়েছিল ৭৫৫টি, যার মধ্যে ৪০৭টিতে তদন্তের কাজ শেষ হয়েছে ও চার্জশিট পেশ করা হয়েছে।
দিল্লি পুলিশ অবশ্য মনে করছে– কোভিড মহামারির মধ্যেও এই অগ্রগতি বেশ সন্তোষজনক; বাকি মামলাগুলোতেও কয়েক দিনের মধ্যেই চার্জশিট পেশ হয়ে যাবে।